সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ফেসবুকে ‘লোক খুঁজছি’ মর্মে একটি পোস্ট করেছেন। তাতে বেশ কয়েকটি পদে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন লোক নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। ঘটনাচক্রে, প্রথম পদটিই হল রাজনৈতিক বিশ্লেষকের। অর্থাৎ, পরিস্থিতি বুঝে যিনি পরামর্শ দেবেন। অর্থাৎ, প্রশান্ত কিশোর বা পিকে-র মতো। যদিও সিপিএম আনুষ্ঠানিক ভাবে বিষয়টিকে পিকের মতো নিয়োগ বলে মানতে চায়নি। সেলিমের বক্তব্য, ‘‘এত দিন মানুষ সিপিএম ডিজিটাল দেখেছেন। এ বার সিপিএম প্রফেশনাল দেখবেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখেই কিছু বিষয় নিয়ে আমাদের এগোতে হচ্ছে। আমরা সেই মতোই কাজ শুরু করে দিলাম।’’
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ছাড়াও গণজ্ঞাপনে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন লেখার লোক, গ্রাফিক ডিজ়াইনার, ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের এগ্জ়িকিউটিভ নিয়োগের বিজ্ঞাপনও দেওয়া হয়েছে। সিপিএমের ওই বিজ্ঞাপন থেকে স্পষ্ট, ২০২৬-এর বিধানসভার কথা মাথায় রেখে ‘শূন্যের গেরো’ কাটাতে সিপিএম এখন থেকেই কাজ শুরু করে দিল।
গত লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা করে সিপিএম ভেবেছিল তাদের ভোট শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। নির্বাচনের আগে থেকেই বাম-কংগ্রেস নেতারা বলছিলেন, এ বারের ভোট হবে ত্রিমুখী। কিন্তু বাস্তবে দেখা গিয়েছে, বাংলায় তৃণমূল-বিজেপি দ্বিমুখী লড়াই হয়েছে। সেই মেরুকরণে সিপিএম আসন তো পায়নি বটেই, উল্টে বহরমপুরের পাঁচ বারের সাংসদ কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী হেরে গিয়েছেন। ২৩ জন সিপিএম প্রার্থীর মধ্যে মাত্র দু’জন তাঁদের জামানত রাখতে পেরেছেন। এক, মুর্শিদাবাদে সেলিম নিজে এবং দ্বিতীয়, দমদমে আর এক ‘প্রবীণ’ সুজন চক্রবর্তী। সৃজন ভট্টাচার্য, দীপ্সিতা ধরের মতো তরুণ-তরুণীদের কেউ দাঁড়াতেই পারেননি।
সম্মেলন পর্বের মধ্যেই এই বিজ্ঞাপন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে দলে। নির্বাচনী সংগঠনের প্রশ্নে সিপিএমের লোকজন যে এখনও নতুন ধারায় খাপ খাওয়াতে পারেননি, তা মানেন অনেক প্রথম সারির নেতাও। এ বিষয়ে অনেক নেতার পুরনো ধ্যানধারণাও দায়ী বলে অভিমত দলের অনেকের। এ বার পেশাদার কাঠামোর দিকে অগ্রসর হতে শুরু করল সিপিএম। কিন্তু তাতে লাভের লাভ কিছু হবে কি না, জানতে অপেক্ষা করতে হবে পরের বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত।