বুধবার কলকাতার ব্যাঙ্কশাল আদালতে বাকিবুর দুবাই যেতে চেয়ে আবেদন করেন। বাকিবুরের বক্তব্য ছিল, ব্যবসায়িক প্রয়োজনে তিনি বিদেশযাত্রা করতে চান। এ ছাড়া তাঁর সন্তানেরাও বিদেশে থাকেন। তাঁদের সঙ্গেও দেখা করতে চান তিনি। পাশাপাশি, সেখানকার কিছু নথিপত্রও পুনর্নবীকরণের প্রয়োজন রয়েছে বলে দাবি করেন বাকিবুর। কিন্তু তাঁর আবেদনে আপত্তি তোলে ইডি। আদালতে তারা দাবি করে, বাকিবুরকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দিলে সমস্যা তৈরি হতে পারে। রেশন মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে বাকিবুরের সম্পর্ক রয়েছে। এই মামলায় বাকিবুরের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছে। তাই এ ক্ষেত্রে বাকিবুরকে দুবাই যেতে দিলে তদন্তে প্রভাব পড়তে পারে।
বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে ইডি দাবি করেছে, রেশন দুর্নীতিকাণ্ডের ‘মাস্টারমাইন্ড’ বাকিবুর। তাঁকে দুবাই যেতে দেওয়া হলে সেই সম্পত্তি তিনি বিক্রি করে দিতে পারেন। যদিও বিচারক ইডির এই যুক্তির সঙ্গে সহমত হননি। তিনি ইডিকে পাল্টা প্রশ্ন করেন, এই আশঙ্কা করার কি কোনও তথ্যপ্রমাণ রয়েছে ইডির হাতে? আদালত বাকিবুরের বিদেশযাত্রায় কোনও ঝুঁকি দেখছে না বলেও মন্তব্য করেছিলেন বিচারক। তার পরই শুক্রবার বিচারক দুবাইযাত্রার অনুমতি দিলেন। তবে আদালত জানিয়েছে, ১০ দিনের মধ্যে ফিরতে হবে তাঁকে। এ ছাড়া আরও কিছু শর্ত দিয়েছে আদালত।
রেশন দুর্নীতির মামলায় গত বছরের ১৩ অক্টোবর বাকিবুরকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গায় বাকিবুরের চালকল রয়েছে। ইডি রেশন দুর্নীতির তদন্ত শুরুর পর থেকেই বিভিন্ন সময়ে চর্চায় উঠে এসেছে বাকিবুর এবং তাঁর চালকলের প্রসঙ্গ। শুধু চালকল নয়, তদন্তকারীদের আতশকাচের নীচে ছিল বাকিবুরের একাধিক হোটেলও। ইডি সূত্রের দাবি করা হয়েছিল, বাকিবুরের বাড়ি থেকে পাওয়া নথির সূত্র ধরে রেশন দুর্নীতি মামলায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের নাগাল পেয়েছেন তাঁরা। তবে চলতি বছরের অগস্ট মাসে জামিন পান বাকিবুর। জামিন পাওয়ার তিন মাসের মধ্যেই দুবাই যাওয়ার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। শুক্রবার সেই আবেদন মঞ্জুর করল আদালত।