• অপহরণ করে সাড়ে ৩ কোটি মুক্তিপণ দাবি, ফরাক্কার হোটেলে উদ্ধার বেলুড়ের দুই ব্যবসায়ী
    বর্তমান | ২৩ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: হাওড়ার বেলুড়ের দুই ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে নিউ ফরাক্কার একটি হোটেলে আটকে রেখেছিল দুষ্কৃতীরা। তাঁদের কাছ থেকে সাড়ে তিন কোটি টাকা মুক্তিপণও দাবি করেছিল। সেটা না পেলে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়। তবে, শেষ পর্যন্ত দুষ্কৃতীদের আর সেই ইচ্ছেপূরণ হয়নি। শুক্রবার সকালে পুলিস গোপন সূত্রে খবর পেয়ে নিউ ফরাক্কা এলাকার একটি হোটেলে হানা দিয়ে ওই দুই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে। পাঁচ দুষ্কৃতীকেও চিহ্নিত করে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিস জানতে পারে, মোটা টাকা মুক্তিপণের দাবিতে ওই দুই ব্যবসায়ীকে নদীয়া থেকে অপহরণ করা হয়। পুলিস জানিয়েছে, ধৃতরা হল রাজু দেবনাথ, রিঙ্কু শেখ, সীতাহার সিং, অভিজিৎ বালা ও রায়হান শেখ। রাজুর বাড়ি  ফরাক্কা থানা এলাকায়। রিঙ্কু ও সীতাহারের বাড়ি মালদহের বৈষ্ণবনগরে। 


    জঙ্গিপুর পুলিস জেলার সুপার আনন্দ রায় বলেন, ‘আমরা ফরাক্কার একটি হোটেল থেকে দুই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। তাঁদের কাছ থেকে মুক্তিপণের দাবি করা হয়। পাঁচ দুষ্কৃতীকে আটক করা হয়েছে। বেলুড় থানার পুলিস এসে ওদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।’ 


    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বেলুড়ের বাসিন্দা দুই ভাই সমর খান ও অম্বর খান একটি ব্যবসায়িক মিটিং করার জন্য নদীয়া গিয়েছিলেন। সেখান থেকে তাঁদের আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। রাতের দিকে মুক্তিপণের দাবি করে পরিবারের সদস্যদের কাছে দুষ্কৃতীরা ফোন করে। সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের লোকেরা বেলুড় থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিস তদন্ত শুরু করে। ওই দুই ভাইয়ের মোবাইল নেটওয়ার্ক ট্র্যাক করে হাওড়া সিটি পুলিস রাতেই রানাঘাট পর্যন্ত আসে। তারপর ওই দুই ব্যবসায়ীর ফোন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আর কোনও হদিশ পায়নি তাঁরা।


    পুলিস পিছু নিয়েছে—এই আশঙ্কায় দুষ্কৃতীরা দুই ব্যবসায়ীকে নিয়ে মালদহে নিয়ে পালিয়ে যায়। বৈষ্ণবনগর গিয়ে হোটেলে থাকার পরিকল্পনা করে তারা। সেখানে নিরাপদ না বুঝে রাতেই ফরাক্কায় চলে আসে। এদিন সকালে নিউ ফরাক্কার একটি হোটেলে অপরিচিত সাতজনকে ঢুকতে দেখে পুলিসকে খবর দেয় হোটেলের কর্মচারীরা। পুলিস গিয়ে হাতেনাতে পাকড়াও করে তাদের। তারপর থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই পুলিস গোটা ঘটনার কথা জানতে পারে। 


    ফরাক্কার এসডিপিও আমিনুল ইসলাম খান বলেন, ‘ফরাক্কা থানার পুলিস অত্যন্ত ভালো একটি উদ্যোগ নিয়েছিল। থানা এলাকার হোটেলগুলিতে কোনও অপরিচিত ও সন্দেহভাজন ব্যক্তিরা যদি ওঠে তাহলে সঙ্গে সঙ্গে থানায় খবর দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেজন্য এদিন একটি হোটেলে এই পাঁচজন দুষ্কৃতী দুই ব্যবসায়ীকে নিয়ে উঠলে আমরা খবর পেয়ে যাই। হোটেলে থেকে তাদের পাকড়াও করে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই গোটা ঘটনা জানা যায়’। 
  • Link to this news (বর্তমান)