• শীতের মরশুমে লালগড় প্রকৃতি উদ্যান ও নগরবন বন্ধ থাকায় হতাশ পর্যটকরা
    বর্তমান | ২৩ নভেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: শীতের আমেজ পড়তেই বিষ্ণুপুরে পর্যটকের আনাগোড়া বেড়েছে। কিন্তু, বিষ্ণুপুরে বেড়ানোর অন্যতম দুই স্থান ‘লালগড় প্রকৃতি উদ্যান’ ও ‘নগরবন’ বন্ধ থাকায় ক্ষুব্ধ পর্যটনপ্রেমী নাগরিকরা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রোজই পর্যটকরা দূর দূরান্ত থেকে এলেও বিষ্ণুপুরের দুই উদ্যানের গেট বন্ধ থাকতে দেখে ফিরে যাচ্ছেন। বিষ্ণুপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রেখা বাউরি বলেন, লালগড় প্রকৃতি উদ্যান খোলার ব্যাপারে আলোচনা চলছে। 


    বনদপ্তরের বিষ্ণুপুর পাঞ্চেত ডিভিশনের আধিকারিক রাজু সরকার বলেন, নগরবন পরিচর্যার জন্য দপ্তরের থেকে কোনও অর্থ বরাদ্দ নেই। পরিচর্যার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান না হওয়ায় এই মুহূর্তে তা খোলার সম্ভাবনা নেই। তবে বিষ্ণুপুরে আসা পর্যটকদের কথা ভেবে বিষয়টি রাজ্যে জানানো হয়েছে। অর্থ মঞ্জুর হলে তখন নগরবন খোলা হবে।  


    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিষ্ণুপুরের লালগড়ে পঞ্চায়েত সমিতির তৈরি একটি প্রকৃতি উদ্যান রয়েছে। বনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখার জন্য ওয়াচ টাওয়ার, ফুলের বাগান, পরিখা দেখার জন্য সারা বছরই পর্যটকরা ওই উদ্যানে ভিড় জমান। ১০টাকা টিকিট কেটে সেখানে প্রবেশ করতে হয়। শীতের মরশুমে সেখানে প্রচুর ভিড় হয়। কিন্তু দু’মাস আগে ওই উদ্যানে আসা কিছু যুবক-যুবতী শালীনতার মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। এনিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। কয়েকজনকে পুলিস আটকও করেছিল। শুধু তাই নয়, উদ্যানের একাংশে বেড়ার অভাবে বাইরে থেকে কিছু অসাধু ব্যক্তি ভিডিও করে পর্যটকদের ব্ল্যাকমেল করছিল বলে অভিযোগ। তারপর থেকে উদ্যানটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু, কয়েকজন অসাধু ব্যক্তির জন্য সুন্দর একটি উদ্যান বন্ধ থাকবে কেন, তা নিয়ে পর্যটনপ্রেমী নাগরিকরা সরব হন। শীতের মরশুম এসে গিয়েছে। তাই পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে অবিলম্বে তা খোলা প্রয়োজন বলে তাঁরা মন্তব্য করেছেন।   


    লালগড় প্রকৃতি উদ্যানের ঠিক বিপরীতে রয়েছে বনদপ্তরের তৈরি ‘নগরবন’।  কয়েক বছর আগে তা তৈরি হয়। সেখানে একাধিক ব্লকে স্মৃতিবন থেকে শুরু করে ভেষজবন সহ নানা ধরনের জীবজন্তুর মূর্তি তৈরি করা হয়। বিষ্ণুপুরে আসা বহু পর্যটক সেখানে ঘুরতে আসেন। কিন্তু, পরবর্তীকালে পরিচর্যার অভাবে ঝোপ ঝাড়ে ভর্তি হয়ে গিয়েছে। নগরবনের গেটেও তালা পড়ে গিয়েছে। শীতের মরশুমে পর্যটকের আনাগোড়া বাড়তেই তাঁরা শহর থেকে বেশ কিছুটা দূরে টোটোয় বা গাড়িতে করে আসছেন। কিন্তু, গেটে তালা বন্ধ থাকায় তাঁরা হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। 


    সোমবার সকালে হুগলির আরামবাগ থেকে সস্ত্রীক এসেছিলেন বিপ্লব ঘোষ। তিনি বিষ্ণুপুরে মন্দির ঘোরার পর টোটোয় করে লালগড়ে আসেন। কিন্তু দু’টি উদ্যানের গেটেই তালা দেখে হতাশ হন। তিনি বলেন, দু’টি উদ্যান বন্ধ আছে বলে জানতাম না। শীতের মরশুমে পর্যটকরা তো আসবেই। এমন সময় তা বন্ধ রাখা কর্তৃপক্ষের উচিত হয়নি। 


    - নিজস্ব চিত্র   
  • Link to this news (বর্তমান)