ব্যবসায়ীর তিন লক্ষাধিক টাকা ছিনতাই, ধৃত দুই বিজেপি কর্মী
বর্তমান | ২৩ নভেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান ও সংবাদদাতা, বর্ধমান: ব্যবসায়ীর চোখে লঙ্কার গুড়ো ছিটিয়ে ৩ লক্ষাধিক টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগে পুলিস দুই বিজেপি কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। শান্তনু চট্টোপাধ্যায় এবং তোতন ভকত নামে ধৃত ওই দু’জনকে বিজেপির বিভিন্ন মঞ্চে দেখা গিয়েছে। ধৃতদের শুক্রবার বর্ধমান সিজেএম আদালতে পেশ করা হয়। ধৃতদের ১৪ দিন নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানায় পুলিস। ধৃতদের সাতদিনের পুলিসি হেফাজত মঞ্জুর করেন সিজেএম।
বিজেপি থেকে সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া শ্যামল রায় বলেন, ওদের দলে এসব লোকজনেরই গুরুত্ব বেশি। ধৃতদের বিজেপির বিভিন্ন কর্মসূচিতে দেখতাম। ওদের থেকে দূরত্ব বাড়ানোর জন্য নেতৃত্বকেও বলা হয়েছিল। কিন্তু কেউ কথা শোনেনি। বিজেপিতে ভুয়ো শিক্ষক, ভুয়ো চিকিৎসকে ভরে রয়েছে। যারা চুরি, ছিনতাই, প্রতরণা করে তাদের বিজেপি সম্মান দিয়ে দলে টেনে নেয়। এনিয়ে বিজেপি নেতা খোকন সেন বলেন, ধৃতদের চিনি না। কে কোথায় ছবি তুলছে সেটা জানার কথা আমার নয়। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৮জুন এক ব্যবসায়ী আলমগঞ্জ এলাকায় তাঁর বাড়ি ফিরছিলেন। ব্যাগে টাকা নিয়ে তিনি বাইক চালিয়ে আসছিলেন। মাঝ রাস্তায় তিনজন তাঁর পথ আটকায়। চোখে লঙ্কার গুড়ো জাতীয় কোনও কিছু ছিটানোর পর তিনি পড়ে যান। দুষ্কৃতীরা ব্যাগ সহ ৩ লক্ষ ৬৫হাজার টাকা নিয়ে চম্পট দেয় বলে অভিযোগ। পুলিস তদন্তে নেমে ধৃতদের নাম জানতে পারে। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়। ঘটনার দিন ওই ব্যবসায়ীকে তাঁর দোকান থেকেই নজরে রাখা হচ্ছিল। তিনি দোকান থেকে বেরনোর সঙ্গে সঙ্গে ধৃত দু’জনকে অন্য একজন খবর দেয়। ধৃতরা আলমগঞ্জে অপেক্ষা করছিল। তাদের আরেক শাগরেদ বাইক নিয়ে দাঁড়িয়েছিল। টাকা লুট করার পর তারা ওই বাইক চালিয়ে পালিয়ে যায়।
এক পুলিস আধিকারিক বলেন, ধৃতদের জেরা করা হচ্ছে। ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় বিজেপির নাম জড়িয়ে যাওয়ায় নেতৃত্ব বিপাকে পড়েছে। দলের এক নেতা বলেন, বিতর্কিত লোকজনদের নেওয়া হলে এই পরিণতি হতে পারে। অনেকেই দলের ভাবমূর্তির ক্ষতি করেছে। তাদের কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টে বিতর্কিত নেতাদের পদ দেওয়া হচ্ছে। তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, ভালো কোনও মানুষ বিজেপি করতে পারে না। যারা অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত তারাই ওদের দলের সম্পদ। সেই কারণেই মানুষ ওদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। বিজেপির একাংশের অবশ্য দাবি, ধৃতরা দলের কোনও পদে নেই। তারা সমর্থক বা কর্মী হতে পারে। তাদের এই কাজের জন্য দল কখনোই দায়ী নয়।