হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ দিঘা থেকে ফেরার পথে অসুস্থ হয়ে বেহালার বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন যুবক। ২৮ বছরের ওই যুবকের নাম মেহবুব আলম। তিনি নিয়মিত মদ্যপান করতেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তাঁর বেশ কিছু শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয়। রক্ত পরীক্ষায় হার্টের সমস্যা ধরা পড়ে। অভিযোগ, এর পরে ইসিজি করার সময় মৃত্যু হয় মেহবুবের।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, মৃতের পরিবারের লোকজনকে পুরো বিষয়টি জানানো হয়। তাঁরা চাইলে মৃত্যুর কারণ জানার জন্য ময়নাতদন্ত করার প্রস্তাবও দেওয়া হয় হাসপাতালের তরফে। যদিও পরিবার তাতে রাজি হয়নি। তারা মৃত্যুর শংসাপত্র দ্রুত হাতে দিতে বলে। সেই মতো মৃত্যুর প্রায় দু’ঘণ্টার মাথায় শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে। হাসপাতাল কর্মীদের দাবি, যুবকের দেহ যখন গাড়িতে তোলা হচ্ছিল, তখনই চত্বরে জড়ো হন প্রায় ২০০ জন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ভিড় দেখে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি এবং থানায় খবর দেন তাঁরা। যদিও থানা থেকে পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি। তার মধ্যেই রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ হাসপাতালে ভাঙচুর শুরু করেন লোকজন। অভিযোগ, কর্মরত এক নার্সকে মারধর করা হয়। তিনি পাশের শৌচালয়ে ঢুকে দরজায় ছিটকিনি তুলে দেন।
পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে। নার্সদের সংগঠন ‘নার্সেস ইউনিটি’-র পক্ষ থেকে ভাস্বতী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতি আর কত দিন চলবে? চাকরি করতে এসে রোজ অন্য লোকের হাতে মার খেতে হবে?’’ এর পরেই তিনি প্রশাসনের দিকে আঙুল তুলেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে শুনলাম আমাদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য ৯০ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছে। নিরাপত্তাকর্মীরা কোথায়? শুনলাম সকলে পালিয়ে গিয়েছিলেন।’’ আরজি কর হাসপাতালে গত ৯ অগস্ট চিকিৎসক-পড়ুয়ার দেহ উদ্ধারের পর কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁদের অন্যতম দাবি ছিল, চিকিৎসক এবং চিকিৎসাকর্মীদের নিরাপত্তা। তার পরেও রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসক, চিকিৎসা কর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। ভাস্বতী জানিয়েছেন, এ ভাবে হাসপাতালে চিকিৎসক, কর্মীদের মারধর করা হলে তাঁরা কর্মবিরতির পথে হাঁটবেন।