জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: 'পুলিস ও তৃণমূল নেতা মন্ত্রীরা মানুষকে ভয় দেখিয়ে টাকা লোভ দেখিয়ে ভোট কিনেছে। আগামী ২৬শে বিধানসভায় বিজেপির রাজ্যে ক্ষমতায় আসবে।' গেরুয়া শিবির এই বক্তব্য রাখলেও, উপনির্বাচনের ফল বলছে চা বলয়ে নিজেদের কতৃত্ব কায়েম করেছে শাসক দল। মাদারিহাটে তৃণমূলের জয়ের পর বানারহাট ব্লকের গয়েরকাটা সাকোয়াঝোড়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় গয়ার কাটা বাজার সংলগ্ন এলাকা-সহ চা বলয়ে বাসিন্দাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে করজোরে ধন্যবাদ জ্ঞাপন তৃণমূল নেতাকর্মীদের। চলছে উল্লাস মিছিল।
ভোটে জয়যুক্ত হওয়ায় বাসিন্দাদের পাশে থাকার আশ্বাস তৃণমূল নেতৃত্বের। মাদারিহাটে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী জয়প্রকাশ টোপ্পো ৩০ হাজারের ভোটে জয়ী হয়েছেন। অথচ এ যাবৎ কোনও ভোটেই মাদারিহাটে জিততে পারেনি জোড়াফুল শিবির। এই আসনটি ১৯৭৭ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত ছিল আরএসপির দখলে। ২০২১ সালের ভোটে মাদারিহাটে বামপন্থীরা হেরেছিলেন। জিতেছিলেন বিজেপির মনোজ টিগ্গা। সেই মনোজকে এ বার লোকসভায় দাঁড় করিয়েছিল বিজেপি। আলিপুরদুয়ার আসন থেকে তিনি জিতে সাংসদ হয়েছেন। সে কারণেই মাদারিহাটে উপনির্বাচন হয়েছে। সেই মাদারিহাট হাতছাড়া হল গেরুয়া শিবিরের।
সিতাইয়ে ১ লক্ষ ৩০ হাজার ১৫৬ ভোটে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী সঙ্গীতা রায়। মাদারিহাট–সিতাই দুটিই উত্তরবঙ্গের আসন। আগে দিনহাটা জিতেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। এমনকী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির নিশীথ প্রামাণিককেও পরাজিত করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। সুতরাং ধীরে ধীরে উত্তরবঙ্গের মাটি শক্ত হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের। শাসকের প্রার্থী নির্বাচন, বিজেপির কোন্দল, গেরুয়া শিবিরের প্রাক্তন সাংসদ জন বার্লার বেসুরো আচরণ তৃণমূলকে চা বাগানে জিততে সাহায্য করেছে।
মাদারিহাট এতদিন বিজেপি-র শক্ত ঘাঁটি হিসেবেই পরিচিত ছিল। রাহুলের হয়ে এবারে সেখানে দফায় দফায় প্রচারে যেতে দেখা গিয়েছে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকেও। তার পরও গড় রক্ষা করতে পারল না গেরুয়া শিবির। বাড়তি অক্সিজেন জুগিয়েছে শাসকের প্রার্থী নির্বাচন। তৃণমূলপ্রার্থী জয়প্রকাশ ২০২১ সাল থেকে শুধু ব্লক সভাপতি নন, এলাকায় তাঁর জনসংযোগও যথেষ্ট নজরকাড়া। অন্যদিকে লোকসভা ভোটে টিকিট না পাওয়ায় দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করেছিলেন জন বার্লা।