প্রতি শনিবারের মতো ‘টক টু মেয়র’ কর্মসূচিতে একে একে কলকাতার বাসিন্দাদের সমস্যার কথা শুনছিলেন ফিরহাদ। সেখানে উপস্থিতি ছিলেন পুর কমিশনার ধবল জৈন থেকে শুরু করে কলকাতা পুরসভার সব শীর্ষ আধিকারিক। কসবা এলাকার ৬৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে মেয়রের কাছে ফোন আসে। ফোনে ওই মহিলা জানান, ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডের আরকে চ্যাটার্জি রোডের বাসিন্দা তিনি। এর আগেও দু’বার ‘টক টু মেয়র’-এ মেয়র ফিরহাদের কাছে নিজের অভিযোগে কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু, অভিযোগের কোনও সুরাহা হয়নি।
এমন কথা শুনেই মেয়র জানতে চান, তিনি ঠিক কী অভিযোগ জানিয়েছিলেন? ওই মহিলা বলেন তিনি একটি বেআইনি নির্মাণ নিয়ে দু’বার মেয়রের কাছে অভিযোগ জানালেও, তাঁর কথা শোনা হয়নি। এমনকি, অভিযোগ করার পর বেআইনি নির্মাণের সঙ্গে একটি বারন্দাও তৈরি হয়েছে। এমন কথা শুনে ক্রুদ্ধ মেয়র ডিজি (বিল্ডিং)-কে বলেন, ‘‘ইনএফিসিয়েন্সি মানেই মানুষ এখন দুর্নীতি বোঝে। কিন্তু, আমাদের কর্পোরেশন মানে চোরপোরেশন নয়। এমন কাজ করতে হবে, যাতে মানুষ ভরসা পান। সরকারি কাজ করছি দায় ছেড়ে দিলাম, এ রকম ভাবে নয়। স্কুলে গিয়ে যাতে 'পুরসভায় কাজ করে আমার বাবা' বলে মাথা উঁচু করে সন্তানেরা চলতে পারে, এই রকম পরিবেশ, এই রকম ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘কোনও ভুলত্রুটি হলে মানুষ আমাকে প্রশ্ন করবে। আপনাকে প্রশ্ন করবে না। তাই আমি বলছি, মন দিয়ে কাজ করুন।’’
উল্লেখ্য, এ বছর মার্চ মাসে গার্ডেনরিচে একটি বেআইনি বহুতল ভেঙে পড়ে। সেই ঘটনায় মারা যান ১৩ জন। সেই ঘটনাটি ঘটেছিল মেয়রের বিধানসভা কেন্দ্র কলকাতা বন্দর এলাকায়। খোদ মেয়রের বিধানসভা এলাকায় এমন ঘটনা ঘটায় বেজায় চাপে পড়েছিল কলকাতা পুরসভা। উদ্যোগী হয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত তিন ইঞ্জিনিয়ারকে সাসপেন্ড (নিলম্বিত) করার পাশাপাশি, বেশ কিছু কড়া পদক্ষেপও করা হয়েছিল। আগামী সোমবার থেকে শুরু হওয়া শীতকালীন অধিবেশন বেআইনি নির্মাণ করলে কড়া শাস্তি দেওয়ার আইন আনছে রাজ্য। তাই বেআইনি নির্মাণ নিয়ে অভিযোগ পেয়েই শীর্ষ আধিকারিকের ওপর খড়্গহস্ত হলেন মেয়র।