• ধুয়ে মুছে সাফ বিরোধীরা, সর্বত্রই জামানত জব্দ সিপিএম-কংগ্রেসের, মহারাষ্ট্রই সান্তনা বিজেপির
    ২৪ ঘন্টা | ২৪ নভেম্বর ২০২৪
  • জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: সিতাই, মাদারিহাট, হাড়োয়া, নৈহাটি. তালডাংরা, মেদিনীপুর, সব জায়গাতেই উড়ে গেল বিরোধীরা। বামেদের কোনও ছাপই নেই। বহু ঢক্কানিনাদ করেও মাটিতে গোঁত্তা খেয়ে পড়ল বিজেপি। তবে দলগতভাবে তাদের একমাত্র সান্তনা হতে পারে মহারাষ্ট্র বিধানসভার ফল। জুলাই ও নভেম্বরে মোট ১০ বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে সব ক'টি আসনেই বাজিমাত করলেন মমতা। সন্দেশখালি ও আরজি কর কাণ্ডের সুফল ঘরে তুলতে পারল না বিরোধীরা। রাজ্যের ৫ আসনেই জামানত বাজেয়াপ্ত হল বাম ও কংগ্রেসের ৷ সিতাই ও হাড়োয়ায় বিজেপি'র জামানত জব্দ হল ৷ সবেমিলিয়ে সবুজ আবীরে ছয়লাপ ৬ কেন্দ্রে।

    বাংলার উপনির্বাচনের ফলকে খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছেন না শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, তৃণমূলের জয়ের পেছনে রয়েছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের প্রভাব। উপনির্বাচনে ভোটই হয় না ৷ নৈহাটি, মেদিনীপুর, তালডাংরা ও মাদারিহাট ২০২৬ এর নির্বাচনে আমরা জিতব ৷ এই তৃণমূলকে সরাতে গেল আমাদের আরও বেশি করে রাস্তায় থাকতে হবে ৷

    অন্যদিকে, সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, এমনিতেই উপ নির্বাচনের ফলে শাসক দলের পক্ষেই য়ায়। মানুষ ঢেলে তৃণমূলকে ভোটে দিয়েছে, যারা এমন মনে করেন তারা তা নিয়ে থাকুন। তৃণমূল যেন মনে রাখে ১ লাখ ৬৯ হাজার ভোটে জেতা তৃণমূলের দুপক্ষ মারামারি করছে। এই নির্বাচনে হাড়োয়তে আমরা দ্বিতীয় হয়েছি। তালডাংরা ও মেদিনীপুরে আমাদের ভোট বেড়েছে।

    দলের জয় তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, হাড়োয়াতে আইএসএফের তো একটা অন্য কেমিস্ট্রি। সেখানেও আইএসএফের প্রার্থী বিপুল ভোটে হেরে গিয়েছে। তাহলে অরিজিনাল লেফট ফ্রন্ট কোথায় গেল।

    উপ নির্বাচনে বৃহত্তর জোট গড়েও ৫ আসনে জামানত জব্দ হল বামেদের। হাড়োয়ায় একই দশা হল জোটসঙ্গী আইএসএফের। আরজিকর আন্দোলনের ছাপ উপনির্বাচনে পড়ে কিনা তার উপরে নজর ছিল সবার। ফলাফলে দেখা গেল কোনও প্রভাবই নেই।

    সিতাইয়ের মতো বিজেপির গড় হেরেছে বিজেপি। মাদারিহাটেও একই অবস্থা। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে উত্তরবঙ্গের বিজেপির ভোট ব্যাঙ্ক ধসের ইঙ্গিত দিচ্ছে উপনির্বাচনের ফল।

    মাদারিহাট গেরুয়া শিবিরের ঘাঁটি, সেই ঘাঁটিও অনায়াসে ‘কঠিন সময়’-ও টপকে গেলে মমতার তৃণমূল। মাদারিহাটে জিতলেন জয়প্রকাশ টোপ্পো। প্রতিদ্বন্দ্বীদের হারিয়ে জয়প্রকাশ জিতেছেন ৩০, ৩০৯ ভোটে। এই প্রথম এই আসনে জয় এল ঘাসফুল শিবিরের। বিধানসভা উপনির্বাচনে নজর ছিল নৈহাটির দিকে। শাসক দলের প্রার্থী সনৎ দে ৪৮ হাজার ৮৭৯ ভোটে জয়ী হয়েছেন। সিতাইয়েও জিতে গেলেন সঙ্গীতা রায় । সঙ্গীতা জিতেছেন ১লক্ষ ৩০ হাজার ১৫৬ ভোটে। হাড়োয়াতে জয়ী হাজি নুরুলের পুত্র,  মেদিনীপুরে জয়ী তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সুজয় হাজরা। লক্ষাধিক ভোট পেয়ছেন তিনি, প্রায় ৩৩ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছেন। তালড্যাংরাতেও জয়ী তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী।

    গত ১৩ নভেম্বর রাজ্যের ৬ কেন্দ্রের বিধানসভা ভোট তখনও শেষ হয়নি। সাংবাদিক বৈঠক থেকে মিডিয়ার একাংশকেই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, “মিডিয়ার একাংশ তো বিরোধীদের হয়ে স্পনসরশিপ করছে। তবু ৬টার  মধ্যে একটা সিটেও কি জেতাতে পারবেন? মিলিয়ে দেখে নিন! রেজাল্টের দিন দুপুরের পর কথা হবে!” তাঁর কথাই মিলে গেল অবশেষে। সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ নৈহাটির প্রার্থীকে জয়ী ঘোষণা করা হয়। ওই কেন্দ্রেই রাজনীতির সব সমীকরণ বদলে, সিপিএম (আই) জোট করেছিল লিবারেশনের সঙ্গে। লালে হাল ফেরাতে, আরজি কর আবহের মধ্যেই আরও একধাপ এগিয়ে নয়া জোট করেছিল বামেরা। তাতেও কোনও যে লাভ হল না, শনিবারের সকাল তার প্রমাণ।

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)