বেড়ো পঞ্চায়েতে আবাসের গ্রামসভা বাতিল, বিডিওকে ঘেরাও করে ক্ষোভ
বর্তমান | ২৪ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, রঘুনাথপুর: রঘুনাথপুর-১ ব্লকের বেড়ো গ্রাম পঞ্চায়েতের আবাস যোজনার গ্রামসভা ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায়। শনিবার বেড়ো উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সভাটি ডাকা হয়েছিল। সেখানেই বিডিও, পঞ্চায়েত প্রধান সহ ব্লক ও পঞ্চায়েত আধিকারিকদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় গ্রামবাসীদের একাংশ। অভিযোগ, যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও তাঁদের নাম আবাস তালিকায় নেই। আবার অনেক যোগ্য ব্যক্তির তালিকায় নাম থাকলেও সার্ভেতে কেটে দেওয়া হয়েছে। তালিকায় অনেক অযোগ্য ব্যক্তির নাম রয়েছে। তাদের নাম কাটা হয়নি। বিক্ষোভের জেরে এদিনের সভা বাতিল হয়ে যায়। সভা বাতিলের পর বিডিও সহ অন্যান্য আধিকারিকরা সভাস্থল ছেড়ে বেরিয়ে যেতে চান। তাঁদের গাড়ি ঘিরে ধরা হয়। পুনরায় তালিকা ধরে তদন্তের দাবি জানানো হয়। পুনরায় তদন্তের কাজ না হলে গ্রামবাসীরা বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
রঘুনাথপুর-১ বিডিও রবিশঙ্কর গুপ্তা বলেন, অনেকে অভিযোগ করেছে, যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও তালিকায় নাম নেই। সেক্ষেত্রে ব্লক প্রশাসনের কিছু করার নেই। কারণ, তালিকায় নতুন করে কারও নাম সংযোজন করা যাবে না বলে নির্দেশ রয়েছে। তবু এদিনের সভা শুরুর পর কয়েকজন অভিযোগ করেন, তাঁরা যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও তাঁদের নাম তালিকা থেকে কেটে দেওয়া হয়েছে। আমরা তাঁদের বিষয়টি তদন্ত করে দেখব বলে জানাই। কিন্তু, তারপরেও কেউ কিছু শুনতে চাননি। ফলে গ্রাম সভা বাতিল করতে বাধ্য হই। আবার অন্য একদিন সময় নিয়ে গ্রাম সভা ডাকা হবে।
প্রশাসনের একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, পুরনো আবাস তালিকায় প্রচুর কারচুপি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। তাই সেই তালিকা ধরে নতুন করে সার্ভের কাজ করা হয়েছে। তালিকা অনুসারে কারা যোগ্য এবং কারা অযোগ্য তার জন্য সার্ভের কাজ করা আধিকারিকদের হাতে কয়েকটি বিষয় তুলে দেওয়া হয়েছিল। সেই অনুসারে সার্ভের কাজ হয়েছিল। সার্ভের কাজ সম্পূর্ণ করার পর তালিকা ব্লক দপ্তরে জমা দেওয়া হয়। তালিকা অনুসারে আবাসের জন্য কারা যোগ্য এবং কারা অযোগ্য সেই বিষয়টি প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতের গ্রাম সভা ডেকে তুলে ধরার জন্য জানানো হয়। গ্রাম সভা যদি সেই তালিকার অনুমোদন দেয় তাহলে তালিকা সম্পূর্ণ বলে বিবেচ্য হয়। পরে সেই তালিকা ব্লক লেভেল কমিটি এবং পরে জেলা লেভেল কমিটিতে যাবে। তারা তালিকার অনুমোদন দিলে উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকতে শুরু করবে।
পঞ্চায়েত দপ্তরের একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, শুধু গ্রাম সভা নয়, আবাসের তালিকা প্রত্যেকটি ব্লক থেকে শুরু করে মহকুমা শাসক, জেলাশাসকের অফিস ও জেলার ওয়েবসাইটগুলিতে দিতে হবে। ২৯ নভেম্বর থেকে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত তালিকা সর্বত্র দিতে হবে। ওই সময়সীমার মধ্যে তালিকা থেকে আসা যে কোনও অভিযোগ খতিয়ে দেখে তার মীমাংসা করতে হবে।এদিনের বিক্ষোভ শামিল শেখ শাহজাহান, সাইফা বিবি, ভাদু তন্তুবায় বলেন, আমরা কাঁচা বাড়িতে থাকি। আবাসের তালিকায় নাম ছিল। অথচ কোনও অজ্ঞাত কারণে তালিকা থেকে নাম কেটে দেওয়া হয়েছে। তাই আমরা পুনরায় তদন্তের দাবি জানিয়েছি।কবি চক্রবর্তী, কবিতা মাজি বলেন, আমরা যোগ্য হলেও তালিকায় নাম নেই। প্রশাসনকে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। কোনও কাজ হয়নি।বেড়ো পঞ্চায়েতের প্রধান টিকা বাউরি বলেন, তালিকা ধরে আধিকারিকরা সার্ভের কাজ করেছে। তাই আমাদের তরফে জানানো হয়েছে, তালিকা থেকে যাদের নাম বাদ পড়েছে, তাদের বিষয়টি যেন বিবেচনা করে দেখা হয়।