• ঘরজামাইয়ের মাথা থেঁতলানো দেহ উদ্ধার হীরাপুরে রেললাইনের ধারে
    বর্তমান | ২৪ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: রেললাইনের ধারে যুবকের ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য হীরাপুরে। শনিবার সকালে হীরাপুর থানার ধরমপুরে মৃতদেহটি উদ্ধার হয়। মৃতের নাম ধমু বাউরি (৩৫) বাড়ি পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে। দু’বছর ধরে ধরমপুরে শ্বশুরবাড়িতেই ঘরজামাই ছিলেন তিনি। তাঁর মুখে ও  মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পুলিস প্রাথমিক ভাবে মনে করছে, বড় পাথরের মতো কোনও সামগ্রী দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়েছে। ঘটনার পরই পুলিস মৃতের স্ত্রী ও শাশুড়িকে থানায় এনে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করছে। ঠিক কী কারণে খুন, তা নিয়ে একাধিক সম্ভাবনা উঠে আসে। বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্কের টানাপোড়েন, নাকি পারিবারিক অশান্তি এর পিছনে দায়ী, তা খতিয়ে দেখছে পুলিস। মদের আসরে কোনও অশান্তি হয়েছিল কি না, পুলিসের নজরে সেটিও রয়েছে। মৃতের পরিবারের লোকজন খুনের অভিযোগ করেছে।


    ডিসি সন্দীপ কাররা বলেন, খুনের কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মৃতের স্ত্রী, শাশুড়ি সহ বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।


    এদিন সকালে স্থানীয় মানুষজন ধরমপুরে রেল লাইনের পাশে যুবকের মৃতদেহ দেখতে পান। দ্রুত খবর যায় পুলিসের কাছে। পুলিস দেহ উদ্ধার করে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসে ময়নাতদন্ত করার জন্য। ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাথা লকেট, সহ নানা সামগ্রী সংগ্রহ করে পুলিস। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। পরে উচ্চপদস্থ পুলিস অফিসাররা তদন্তে এসে দেখতে পান, বিভিন্ন জায়গায় চাপ চাপ রক্ত পড়ে রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের দেখে মনে হয়েছে, কিছুটা দূরে খুন করে তাঁকে রেল লাইনে ফেলা হয়েছে। অন্যদিকে পুরুলিয়া থেকে মৃতের পরিবারের লোকজন হীরাপুর থানায় হাজির হন। তাঁরা বলেন, ধমুর বাপের বাড়ি থেকে ফোন করা হয়নি। তাঁদের একজন এখানে পরিচিত রয়েছেন, তিনিই খবর দেন। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ধমু বাউরির দু’বছর আগে বিয়ে হলেও স্ত্রী শ্বশুরবাড়ি যেতেন না। তাই নিয়ে অশান্তিও ছিল। ধমু ছিল তাঁর স্ত্রীর তৃতীয় স্বামী। তাঁদের একটি সন্তান রয়েছে। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে ফাটলের অন্যতম কারণ ছিল বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক। স্ত্রীর একাধিক বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে বলে ধমুর সঙ্গে স্ত্রীর অশান্তিও হতো। অন্যদিকে ব্যাপক ভাবে মদ্যপান করত ধমু। শুক্রবার রহস‌্যজনক ভাবে তিনি একবার কুয়োয় পড়ে যান। যদিও এলাকাবাসীর নজরে পড়ে যাওয়ায় তাঁকে দ্রুত উদ্ধার করা হয়। তার পরের দিনই রেললাইন থেকে মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় রহস্য আর জটিল আকার নিয়েছে। 


    মৃতের খুড়তুতো ভাই বিকাশ বাউরি বলেন, আমরা চাই খুনের সঠিক তদন্ত হোক। মৃতের বউদি ভারতী বাউরি বলেন, স্ত্রী শ্বশুরবাড়ি যেত না। মেয়েকে নিয়ে কালীপুজোর সময়েও ধমু বাড়ি এসেছিল।
  • Link to this news (বর্তমান)