• ১ ডিসেম্বর ফের ট্রেন অবরোধের ডাক দিল নলহাটি নাগরিক মঞ্চ
    বর্তমান | ২৪ নভেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: শুধু আশ্বাসই সার। রেলের দীর্ঘ বঞ্চনার অবসান এখনও ঘটেনি। তারই জেরে জনদুর্ভোগ বাড়ছে। প্রতিবাদে আগামী ১ ডিসেম্বর লাইনে নেমে আবারও ট্রেন অবরোধের কথা ঘোষণা করেছিল নলহাটি নাগরিক মঞ্চ। গত অক্টোবর মাসে রেল কর্তাদের চিঠি দিয়ে কর্মসূচির বিষয়টি জানিয়েও দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু তারপরও রেলের উচ্চবাচ্য নেই। তাই রেল অবরোধের আগে শনিবার থেকে স্টেশনে টিকিট কাউন্টারের সামনে টানা তিনদিনের অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করলেন নাগরিক মঞ্চের সদস্যরা। তাঁদের সাফ কথা, মিষ্টি কথায় আর আমরা ভুলতে রাজি নই। এবার রেল অবরোধ হবেই। আন্দোলন করেই দাবি ছিনিয়ে নেব। 


    গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন নলহাটি জংশন। রয়েছে ৫১ পীঠের অন্যতম নলাটেশ্বরী মন্দির ও বৃহৎ পাথর শিল্পাঞ্চল। দক্ষিণ ও উত্তরবঙ্গের সঙ্গে রেল যোগাযোগের অন্যতম এই জংশন দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত। উত্তরবঙ্গ ও কলকাতা যাওয়ার অধিকাংশ এক্সপ্রেস ট্রেনের স্টপেজ নেই এখানে। বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষকে নির্ভর করতে হয় ১৫ কিমি দুরের রামপুরহাট জংশনের উপরে। তার উপরে করোনাকালে বন্ধ একাধিক লোকাল ট্রেন আজও চালু হয়নি। রেল স্টেশনেরও তেমন উন্নয়নও হয়নি। এর আগে ২১ জানুয়ারি রেল অবরোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নাগরিক মঞ্চ। কিন্তু তার আগের দিন হাওড়া ভিভিশনের ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার রাহুল রঞ্জন নাগরিক মঞ্চের সঙ্গে বৈঠকে বসে দু’মাসের মধ্যে কয়েকটি দাবি পূরণের আশ্বাস দেওয়ায় রেল অবরোধ থেকে সরে আসে মঞ্চ। কিন্তু ওই দু’মাসের মধ্যে কেবল আপ গৌড় এক্সপ্রেসের স্টপেজ ও করোনা কালে বন্ধ নলহাটি আজিমগঞ্জ লোকাল চালু ছাড়া বাকি দাবি পূরণ করেনি রেল। প্রতিশ্রুতি পূরণ না করায় গত ৩১ মার্চ সকাল থেকে ফের রেল অবরোধের সিদ্ধান্ত হয়। সেইমতো জেলা প্রশাসন থেকে রেল কর্তৃপক্ষের সর্বোচ্চ পদাধিকারীদের চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয়। অবরোধের প্রস্তুতির মধ্যে ২৭ মার্চ নলহাটি জংশনে আসেন এসিএম হাওড়া গৌরচন্দ্র কিস্কু। তিনি লিখিত আশ্বাস দিয়ে বলেন, লোকসভা নির্বাচন আচরণ বিধি উঠে যাওয়ার পর রেলের তরফে মঞ্চের সঙ্গে আলোচনায় বসা হবে। 


    কিন্তু লোকসভা ভোট মিটে গেলেও রেলের তরফে কোনও উচ্চবাচ্য নেই। মঞ্চের পক্ষ থেকে রেল কর্তাদের একাধিকবার রিমাইন্ডার চিঠি দিলেও তার কোনও উত্তর তাঁরা পাচ্ছেন না। তাই গত ২০ অক্টোবর মঞ্চের সদস্যরা বৈঠকে বসে আবার রেল অবরোধের ডাক দেন। তাঁদের দাবি, এই জংশনে আপ ও ডাউন কাঞ্চনজঙ্ঘা, কুলিক ও ডাউন উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসের স্টপেজ দিতে হবে। এছাড়া যাত্রী সুবিধার্থে স্টেশনের উন্নয়ন ও করোনা কালে বন্ধ থাকা ট্রেন চালু করতে হবে। 


    নাগরিক মঞ্চের সভাপতি সনকা বিশ্বাস, ও সম্পাদক অশোক চৌধুরী বলেন, এর আগে দু’বার অবরোধের ডাক দিয়ে শেষ মুহূর্তে রেলের আশ্বাসে সরে আসতে হয়েছে। এবার আর মিথ্যা আশ্বাসে ভুলতে রাজি নই। রেল অবরোধ হচ্ছেই। দু’দিন আগে রেল কর্তারা আলোচনায় বসতে এলেও আমরা শুনব না। যা কিছু আশ্বাস দেওয়ার ১ ডিসেম্বর অবরোধ স্থলে এসে আপামর নলহাটিবাসীর সামনে দিতে হবে। দাবিপূরণ না হলে লাইন থেকে সরব না। 


    ইতিমধ্যে মঞ্চের পক্ষ থেকে দলমতনির্বিশেষে সমস্ত স্তরের মানুষকে আন্দোলনে শামিল হওয়ার জন্য বাড়ি বাড়ি হ্যান্ডবিল বিলির পাশাপাশি মাইকিংও শুরু হয়েছে।   
  • Link to this news (বর্তমান)