• লটারিতে কোটিপতি, ১০৮ ঢাকের জয়যাত্রায় অসীম-আনন্দ
    এই সময় | ২৪ নভেম্বর ২০২৪
  • এই সময়, কৃষ্ণনগর: নদিয়ার তেহট্টে বাস রাস্তার ধারে টেবিল পেতে লটারির টিকিট বিক্রি করেন বছর বিয়াল্লিশের অসীম। রাস্তার ধুলো খেয়ে দিনভর বসে থেকে যেদিন টিকিট বিক্রি কম হতো, মনমরা হয়ে থাকতেন। কখনও লুকিয়ে কেঁদেও ফেলতেন। কলেজ–স্কুল পড়ুয়া ছেলেমেয়ের পড়ার খরচ কী ভাবে জোগাড় করবেন, এই চিন্তা তাঁকে তাড়া করে বেড়াত।

    শনিবার সেই রাস্তায় অসীম দেখালেন নিজের ‘আনন্দ’। পরনে নতুন গেঞ্জি আর ধুতি। কোমরে গামছা বাঁধা। মুখে চওড়া হাসি। পরিবার ও ঘনিষ্ঠদের নতুন পোশাক পরিয়ে একশো আট ঢাকিকে নিয়ে শোভাযাত্রা করলেন অসীম, বাড়ির কালীপুজোর শোভাযাত্রা। একটা নয়, জোড়া কালীও নয়। এক সঙ্গে চারটি কালী প্রতিমার পুজো।

    নদিয়ার তেহট্ট থানার নাজিরপুর বাগাডোবা গ্রামের বাসিন্দা অসীম দত্ত ২৮ অক্টোবর রাতে জানতে পেরেছিলেন লটারিতে তার এক কোটি টাকা লেগেছে। জানাজানি হতেই রাতারাতি গ্রামের ‘ভিআইপি’ বনে যান তিনি। শনিবার তাঁদের বাগডোবা গ্রামের বাড়িতে কালীপুজোর মহা আয়োজন দেখে অবাক আশপাশের গ্রাম। নাজিরপুর বাজার কমিটির কর্তা তুহিন সাহা বলেন, ‘গ্রামে দুর্গা, কালী, জগদ্ধাত্রী বা সরস্বতী পুজোতে একটা ক্লাব বা বারোয়ারির সঙ্গে এক সঙ্গে ৫–১০টা ঢাক দেখেছি। এখানে তো দেখলাম এক সঙ্গে ১০৮টি ঢাক।’

    অসীম বলেন, ‘এতজন ঢাকি জোগাড় করতে নদিয়ার বিভিন্ন গ্রাম ছাড়াও মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা–সহ আরও কয়েকটি গ্রামে যোগাযোগ করতে হয়েছে। হাজার দু’য়েক মানুষকে একদম বসিয়ে খিচুড়ি, আলুর দম, পাঁচ মিশালি তরকারি ও মিষ্টি খাইয়েছি।’

    দশ বছরের বেশি সময় ধরে গ্রামের বাস স্ট্যান্ডে রাস্তার ধারে রোজ টেবিল পেতে লটারি টিকিট বিক্রি করেন। অবিক্রিত টিকিটের গোছা থেকে লেগে যায় প্রথম পুরস্কার এক কোটি টাকা। এত টাকা দিয়ে কী করবেন? এ দিনও খোলসা করে বলতে চাননি অসীম। শুধু বলেছেন, ‘ছেলেমেয়ের উচ্চশিক্ষার জন্য বেশ কিছু টাকা তুলে রাখব। দোকানটা পাকা করব। তবে বাস রাস্তার ধারে টেবিল পেতে আগের মতই বসে টিকিট বিক্রি করব।’
  • Link to this news (এই সময়)