• জিতে সনতের মুখে সেই স্বাস্থ্য
    আনন্দবাজার | ২৪ নভেম্বর ২০২৪
  • আর জি কর আন্দোলনের অন্যতম উৎসস্থল থেকে নৈহাটি বিধানসভা কেন্দ্র খুব বেশি দূরে নয়। ফলে টানা আন্দোলনের প্রভাব এই কেন্দ্রের উপনির্বাচনে পড়বে বলেই মনে করা হচ্ছিল। যদিও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব প্রথম থেকেই আশাবাদী ছিলেন।

    শনিবার ইভিএম খুলতে দেখা গেল, পার্থ ভৌমিকদের অনুমানই ঠিক। প্রথম থেকে টানা এগিয়ে থেকে প্রায় ৫০ হাজার ভোটের ব্যবধানে জিতলেন তৃণমূলের সনৎ দে। এবং জয়ের পরে, দিনের শেষে তাঁর মুখেও সেই আর জি কর প্রসঙ্গ। ‘কথা’ দিলেন, এলাকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি করাটাই হবে তাঁর প্রধান লক্ষ্য।

    ভোটের দিন শাসক দলের চড়ুইভাতি এবং অনেক বুথে বিরোধীদের এজেন্ট না থাকাই যেন ফলের আগাম ইঙ্গিত দিচ্ছিল। শেষে শুধু আর জি কর নয়, বিরোধী দলগুলি মেনে নিল, শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকের স্বার্থ, কর্মসংস্থানের মতো বিষয়গুলিও ভোট বাক্সে সাড়া ফেলেনি।

    আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে তৈরি হওয়া আন্দোলনের নেপথ্যে সিপিএম-লিবারেশনের যুগ্ম মদতের কথা বলে প্রচার করেছিল খোদ তৃণমূলই। এর পাশাপাশি, কল-কারখানার শহর নৈহাটিতে শ্রমিক আন্দোলনে একসময় লিবারেশনের যে ভূমিকা ছিল, তাকেও কাজে লাগাতে চেয়েছিল বামফ্রন্ট। সে কারণেই এই আসনটি সিপিএম ছেড়েছিল লিবারেশনকে।

    কিন্তু তৃণমূলস্তরে এই জোট দানা বাঁধতে পারেনি উনিশ দিনের প্রচার পর্বে। লিবারেশনের প্রতীকও আমজনতার কাছে খুব পরিচিত নয়। লিবারেশনের প্রার্থী দেবজ্যোতি মজুমদারের আক্ষেপ, “উপরতলা থেকে গাঁটছড়া বেঁধে নির্বাচনের ময়দানে নামিয়ে দেওয়া হলেও নীচের তলায় সেই জোট ততটা দানা বাঁধতে পারেনি। সিপিএম ভোটাররা যেমন বেরোননি, তেমনই আমরাও তাঁদের সকলের কাছে স্বল্প সময়ে পৌঁছতে পারিনি।” একই সঙ্গে আর জি কর আন্দোলনের প্রভাব নিয়েওতিনি সন্দিহান।

    নৈহাটিতে তৃণমূল প্রার্থী সনৎ দে-র জয়ের মূল কারিগর যিনি, বর্তমানে ব্যারাকপুরের সাংসদ পার্থ ভৌমিকের মুখেও আর জি কর আন্দোলনের প্রসঙ্গ। বললেন, “আর জি কর-কাণ্ড নিয়ে সরকারের পদক্ষেপের ভুল ব্যাখ্যা করেছিলেন যাঁরা, তাঁরাও এই নির্বাচনে তৃণমূলকেই বেছেছেন।” তাঁর কথায়, “নির্বাচনের আগেই বলেছিলাম, নৈহাটির মানুষ নিশ্চিত ভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের উপর ভরসা রাখে।” বিজেপি প্রার্থী রূপক মিত্রও তৃণমূলের এই জয়কে মানুষের রায় বলেইউল্লেখ করেছেন।

    নৈহাটি স্টেডিয়ামে গণনার আগেই শহর জুড়ে তৃণমূল প্রার্থীর নামে শুভেচ্ছার ফ্লেক্স, তোরণ, কাট-আউটের ছড়াছড়ি। জয়ের পরেই নব নির্বাচিত বিধায়ককে সবুজ আবির মাখিয়ে রজনীগন্ধার মালা পরিয়ে মিছিল করেন দলীয় সমর্থকেরা। সনৎ বলেন, “নৈহাটিতে গোটা ভোটপর্ব শান্তিপূর্ণ ছিল। আগামীতেওতা-ই থাকবে।”

    বিরোধী প্রার্থীরা তাঁর সুজন, এ কথা জানিয়ে সনৎ বলেন, “আমার লক্ষ্য, এই এলাকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি করা। আর কোনও আর জি কর আমরা চাই না। তাই হাসপাতালকে সাজাব সবার আগে।”

  • Link to this news (আনন্দবাজার)