• রদবদল শীঘ্রই, এ বার তৃণমূলের নজরে ২০২৬
    আনন্দবাজার | ২৪ নভেম্বর ২০২৪
  • বিধানসভা উপনির্বাচনে বিরোধীদের উড়িয়ে দিয়ে ফের বিপুল সাফল্য ধরে রাখল শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। আর জি কর-কাণ্ডের প্রভাব বৃহত্তর অংশের জনতার উপরে নেই বলে তৃণমূল নেতৃত্ব আগে থেকেই যে দাবি করছিলেন, সেটাই উপনির্বাচনের ফলে প্রমাণ হল বলে মনে করছে শাসক শিবির। সেই সঙ্গে দলের সংগঠন ও স্থানীয় প্রশাসন পরিচালনার স্তরে যে পরিবর্তনের পরিকল্পনা নিয়েছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব, উপনির্বাচনে এই ফলের পরে তাতে আরও গতি আসবে বলেই দলীয় সূত্রে ইঙ্গিত।

    উপনির্বাচনে সাফল্যের পরে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপিকে নাম না-করে ‘জমিদার’ বলে কটাক্ষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সংবাদমাধ্যম এবং কলকাতা হাই কোর্টের একাংশকেও এক হাত নিয়েছেন অভিষেক। এক্স হ্যান্ড্‌লে তিনি বলেছেন, “জমিদার, সংবাদমাধ্যম ও কলকাতা হাই কোর্টের একাংশ তাদের কায়েমি স্বার্থের জন্য বাংলাকে বদনাম করার লক্ষ্যে যে ভাষ্য তৈরি করেছিল, তাকে অতিক্রম করেই উপনির্বাচনে এই জয়। আর প্রথম বার আপনাদের জন্য কাজ করার সুযোগ আমাদের দেওয়ায় মাদারিহাটের মানুষের প্রতি আমরা বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।” অভিষেকের মতোই মমতার কথাতেও বিজেপিকে নাম না-করে ‘জমিদার’-কটাক্ষ উঠে এসেছে। মমতাও তাঁর বার্তায় বলেছেন, “আমরা জমিদার নই, মানুষের পাহারাদার। আপনাদের আশিস আজীবন হৃদয় স্পর্শ করে থাকবে।”

    আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাট, কোচবিহারের সিতাই, বাঁকুড়ার তালডাংরা, পশ্চিম মেদিনীপুরের মেদিনীপুর এবং উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়া ও নৈহাটি— এই ছয় বিধানসভা কেন্দ্রেই উপনির্বাচনে তৃণমূলের ভোট বেড়েছে গত লোকসভা নির্বাচনের তুলনায়। মাদারিহাট আসনটি এই প্রথম বারের জন্য তারা জিতেছে। তৃণমূল নেত্রী মমতা ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেকের যৌথ সম্মতিতে এ বারের উপনির্বাচনে প্রার্থী বাছাই হয়েছিল। সেই প্রার্থীরা সফল হওয়ার পরে সাংগঠনিক স্তরে রদবদলের প্রক্রিয়ায় হাত দেওয়া হবে শীঘ্রই।

    লোকসভা ভোটের পরেই প্রথমে রাজ্যের চার বিধানসভা কেন্দ্রে এবং এ বার ছয় কেন্দ্রে উপনির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয়ের ফলে সংগঠনে ঝাঁকুনি দেওয়ার বিষয়ে পদক্ষেপ করতে এবং প্রয়োজনে ‘কড়া সিদ্ধান্ত’ নিতেও দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সুবিধা হল বলে তৃণমূল সূত্রে ব্যাখ্যা। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, কাল, সোমবার কালীঘাটে দলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক রয়েছে। সূত্রের খবর, মমতা, অভিষেক-সহ দলের শীর্ষ নেতৃত্বের উপস্থিতিতে সেখানে রদবদল সংক্রান্ত আলোচনা হতে পারে। তার পরেই কার্যকর হবে রদবদলের প্রথম ধাপ। আর সেই সূত্রেই ২০২৬-এর বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতিও তৃণমূল শুরু করতে চলেছে। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে দলের কৌশল নিয়েও আলোচনা হতে পারে কালীঘাটের বৈঠকে। সূত্রের খবর, কলকাতায় দলের ওই বৈঠকে যোগ দেবেন বলে তৃণমূলের লোকসভা ও রাজ্যসভার দুই নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও ডেরেক ও’ব্রায়েন সংসদ অধিবেশন উপলক্ষে দিল্লিতে সর্বদল বৈঠকে থাকছেন না।

    পরের বিধানসভা ভোটে রাজ্যে তাঁরা আড়াইশো আসন পাবেন বলে ফের দাবি করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। সেই সঙ্গেই তাঁর বক্তব্য, “আর জি কর-সহ কিছু বিষয়ে যে মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছিল, বাংলার মানুষ সেটা প্রত্যাখ্যান করেছেন। উন্নয়নের অভিজ্ঞতায় মিথ্যা প্রচারের জবাব এটা।”

  • Link to this news (আনন্দবাজার)