বলাগড় থানার অন্তর্গত গুপ্তিপাড়া বাধাগাছি এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকত স্বর্ণাভ সাহা (৪) নামে ওই শিশু। বাবা যাদব সাহা পেশায় গাড়িচালক। শনিবার সকাল থেকেই স্বর্ণাভকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, নিখোঁজ হওয়ার আগে সে বলেছিল ঠাকুরমার ঘরে খেলতে যাচ্ছে। এর কিছু ক্ষণ পর থেকেই আর দেখা পাওয়া যায়নি। শেষে প্রায় ২০ ঘণ্টা পরে রবিবার ভোরে ঠাকুরদা শম্ভু সাহার শৌচালয় থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় শিশুকে। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
শনিবার সকালে বাড়ি থেকেই রহস্যজনক ভাবে শিশু নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পর খবর দেওয়া হয় বলাগড় থানায়। শনিবার দীর্ঘ সময় ধরে শিশুর খোঁজ চালায় পুলিশ। তার বাড়িতে যান হুগলি গ্রামীণ পুলিশের অতিরিক্ত সুপার কল্যাণ সরকার, ডিএসপি (অপরাধ) অভিজিৎ সিংহ মহাপাত্র। শিশুর সন্ধান পাওয়ার জন্য হুগলি গ্রামীণ পুলিশের সমাজমাধ্যমের পাতাতেও পোস্ট করা হয়। ড্রোন উড়িয়ে, স্নিফার ডগ এনে চলে খোঁজাখুঁজি। শেষে ওই বাড়ির ভিতরেই শৌচালয় থেকে পাওয়া যায় শিশুর দেহ।
কী কারণে শিশুর মৃত্যু হল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। বাড়িতে শৌচালয়ের ভিতরে দেহ পড়ে থাকার পরেও কেন দীর্ঘ ক্ষণ সেটি অগোচরে থেকে গেল, তা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে। মৃতের মেসো সুধীর সরকারের বক্তব্য, শনিবার সকাল থেকে শিশুর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তার পর থেকে নিশ্চয়ই শৌচালয় ব্যবহারও হয়েছে। তবুও কেন সারা দিন কেটে যাওয়ার পর রবিবার ভোরে দেহ মিলল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের সন্দেহ, বাড়ির ভিতরেই কিছু ঘটে থাকতে পারে। তাঁরা চাইছেন, বলাগড় থানার ওসি নিজে এই ঘটনার তদন্ত করুন এবং ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে এই মামলার বিচার হোক।
হুগলি গ্রামীণ পুলিশের অতিরিক্ত সুপার জানিয়েছেন, বলাগড়ের গুপ্তিপাড়ায় শিশু নিখোঁজের ঘটনায় পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যে অপহরণের মামলা রুজু হয়েছে। শিশুর ঠাকুরদা, ঠাকুরমা এবং জেঠিমাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।