• জল না পেয়ে চরম সমস্যায় কানাইনগরের ৪৫০ পরিবার, দু’বছর পাইপ লাইন বসলেও শুকনো ট্যাপকল 
    বর্তমান | ২৫ নভেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: বাড়ি বাড়ি পৌঁছেছে ট্যাপ কলের পাইপ লাইন, বাড়ি বাড়ি বসেছে কলও। অথচ দু’বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত সেই কল দিয়ে জল পড়েনি, এমনই অভিযোগ গ্রামবাসীদের। ফলে তীব্র পানীয় জল সংকটের মধ্যে ভুগছেন নবদ্বীপ ব্লকের মাজদিয়া-পানশিলা পঞ্চায়েতের কানাইনগর গ্রামের প্রায় সাড়ে চারশো পরিবার। ফলে একপ্রকার বাধ্য হয়েই অধিকাংশ গ্রামবাসীকে কেনা জলের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। আবার কেউ কেউ জেনে বুঝেই আর্সেনিকযুক্ত টিউবওয়েলের জল পান করে চলেছেন।


    গ্রামবাসীরা জানালেন, তিন বছর আগে পাইপ লাইনের কাজ শুরু হয়েছিল। আর দু’বছর আগে বাড়ির সঙ্গে ট্যাপ কলের পাইপ লাইনের সংযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখনও বাড়ি বাড়ি পৌঁছয়নি ট্যাপ কলের জল। তাঁদের  অভিযোগ, বারবার পঞ্চায়েতকে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। এই ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ কানাইনগর গ্রামের বাসিন্দারা। জানা গিয়েছে, নবদ্বীপ ব্লকের মাজদিয়া-পানশিলা পঞ্চায়েতের কানাইনগর গ্রামের উত্তরপাড়া, দক্ষিণপাড়া, পূর্বপাড়া এবং মধ্য পাড়া, এই চারটি পাড়ায় এখনও বিশুদ্ধ ট্যাপ কলের পানীয় জল পৌঁছয়নি। পিএইচই-র মাধ্যমে তিন বছর আগে বাড়ি বাড়ি ট্যাপ কলের পাইপ লাইনের কাজ শুরু হয়। দু’বছর আগে পাইপলাইন পৌঁছে গিয়েছে প্রতিটি বাড়িতেই। এমনকী বাড়ি বাড়ি ট্যাপ কলের লাইন সংযোগ করে দেওয়া হয়েছে।  স্থানীয় শিমুলগাছি জলাধার থেকে জল সরবরাহের কথা বলা হয়েছিল কিন্তু আজও গোটা পরিস্থিতি বিশ বাঁও জলে। পঞ্চায়েত থেকে বলা হচ্ছে, যাঁরা জল পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন, তাঁরাই সেটা দেবেন। 


    কানাইনগর গ্রামের মধ্যপাড়ার বাসিন্দা সুনীতি বিশ্বাস বলেন, যাঁদের জল কেনার ক্ষমতা নেই, তাদেরকে আয়রন যুক্ত টিউবওয়েলের জল খেতে হয়। এদিকে জল না আসায় নতুন কলে জং ধরে গেল। দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা সবিতা দত্ত বলেন, বাড়ির টিউবওয়েলের জল দিয়ে শুধুমাত্র গৃহস্থালির কাজকর্ম করা যায়, তা পান করা যায় না।


    মাজদিয়া-পানশিলা গ্রাম পঞ্চায়েতের সঞ্চালক তৃণমূলের মিঠুন ঘোষ বলেন, তিন বছর আগে এই পঞ্চায়েতে বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেসের মিলিজুলি বোর্ড ক্ষমতায় থাকাকালীন বাড়ি বাড়ি পাইপ লাইনের কাজ শুরু হয়েছিল। আমরা ক্ষমতায় আসার পর যে সমস্ত বাড়িতে পাইপ লাইন পৌঁছয়নি, সেই বাড়িগুলোতে পাইপ লাইনের ব্যবস্থা করেছি। পঞ্চায়েতের বেশ কিছু এলাকা উঁচু নিচু হওয়ার কারণে সমস্ত পরিবারের কাছে জল পৌঁছতে অসুবিধা হচ্ছে। আমরা প্রতিনিয়ত পিএইচই-র সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করছি। এ প্রসঙ্গে কৃষ্ণনগর সদরের মহকুমা শাসক শারদ্বতী চৌধুরী বলেন, পিএইচই-র এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার এবং নবদ্বীপের বিডিওকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা দ্রুত নিতে বলা হয়েছে যাতে সাধারণ মানুষের পানীয় জলের সংকট না হয়।
  • Link to this news (বর্তমান)