• বাংলাদেশের জেলে ৭৯ ভারতীয় মৎস্যজীবী, পরিবারের দিন কাটছে অনাহারে
    বর্তমান | ২৫ নভেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, কাকদ্বীপ: প্রায় দেড় মাস আগে সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে বাংলাদেশের উপকূলরক্ষী বাহিনীর হাতে ধরা পড়েছিলেন ৭৯ মৎস্যজীবী। তাঁরা দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা। ৭৯ জনই এখন বাংলাদেশের জেলে রয়েছেন। ফলে ভয়ানক সমস্যায় পড়েছে ধৃত মৎস্যজীবীদের পরিবার। পরিবারের বহু সদস্য একপ্রকার অনাহারেই দিন কাটাচ্ছে। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে কবে বাংলাদেশ থেকে বাড়ি ফিরবে? সে আশাতেই আকুল হয়ে বসে ৭৯ জনের স্ত্রী-সন্তান-অভিভাবক। 


    মাস দেড়েক আগে পাঁচটি ট্রলার সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়েছিল। অভিযোগ, ট্রলারগুলি বাংলাদেশের জল সীমানার ভিতরে ঢুকে পড়ে। তারপর বাংলাদেশের উপকূলরক্ষী বাহিনী ট্রলার সহ ৭৯ মৎস্যজীবীকে গ্রেপ্তার করে নেয়। বর্তমানে ধৃতরা বাংলাদেশের পটুয়াখালি ও বাঘেরহাট জেলে রয়েছেন। একটি ট্রলারে ছিলেন কাকদ্বীপের ত্রিলোকচন্দ্রপুরের বাসিন্দা সাগর যাদব। গত এক বছর আগে তাঁর বাবা পরিবার ছেড়ে চলে গিয়েছেন। বর্তমানে মা ও ছেলে একসঙ্গে থাকেন। অভাবের সংসার। দুর্গাপুজোর সময় তাঁরা নতুন পোশাক পর্যন্ত কিনতে পারেন না। কালীপুজো নাগাদ কিছু টাকা রোজগারের আশায় সমুদ্রে মাছ ধরতে বেরলেন সাগর। কিন্তু জেলে চলে গিয়ে এখনও বাড়ি ফিরতে পারলেন না। তাঁর মা অনিমা যাদব বলেন, ‘সাগর বাংলাদেশের একটি জেলে রয়েছে বলে শুনেছি। তবে কোথায় আছে, কবে ফিরবে? কিছুই জানি না। ছেলে এখনও ফেরেনি বলে খুব সমস্যায় পড়েছি। ওই একমাত্র রোজগেরে। এখন অর্ধেক দিনই খেতে পাই না। কয়েকজন প্রতিবেশী মাঝেমধ্যে ভাত ও তরকারি দিয়ে যান। কীভাবে যে বেঁচে রয়েছি আমিই জানি।’ সাগরের মা একা নন। তাঁর মতো কার্তিক দাস, আকাশ বিশ্বাস সহ বাকি পরিবারগুলির সদস্যদেরও একই অবস্থা। তাঁদের একটাই দাবি, ‘সরকার গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টিকে দেখুক। এবং বাংলাদেশ থেকে সবাইকে ফিরিয়ে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করুক।’ সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবী শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক সতীনাথ পাত্র বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে সত্যিই ওই মৎস্যজীবী পরিবারগুলি অসহায় হয়ে পড়েছেন। তাঁরা খুব কষ্টের মধ্যে রয়েছেন। ইউনিয়নের পক্ষ থেকে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।’
  • Link to this news (বর্তমান)