• গুপ্তিপাড়ায় শিশু খুনে ধৃত ঠাকুর্দা, ঠাকুমা ও  জেঠিমা 
    বর্তমান | ২৫ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: গুপ্তিপাড়ার নিখোঁজ শিশুকে রবিবার ভোররাতে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করল পুলিস। পুলিস জানিয়েছে, মৃতের নাম স্বর্ণাভ সাহা (৪)।তার বাড়ির সামনের একটি কংক্রিটের শৌচাগারে দেহটি পাওয়া যায়। অথচ, শনিবার দিনভর সেখানেই ছিল পুলিসের টহলদারি। পুলিস থেকে সাহাবাড়ি সদস্যরা, অনেকেই দিনভর ওই শৌচাগার ব্যবহার করেছেন। সেখানে একাধিকবার তল্লাশিও করা হয়। ফলে, দেহটি যে বাইরে থেকে এনেই সেখানে ফেলা হয়েছে তা পরিষ্কার। শিশুটিকে যে খুনই করা হয়েছে পরিষ্কার হয়েছে সেই বিষয়টিও। এই ঘটনায় পুলিস রবিবার তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতরা মৃত শিশুটির ঠাকুর্দা, ঠাকুমা ও জেঠিমা।


    খুনের কারণ এবং হত্যকারী বা হত্যকারীদের সম্পর্কে পুলিস শুরুতে ধন্দে ছিল। তদন্তকারীদের সন্দেহ, শিশুটিকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। এই ঘটনার পিছনে রয়েছে পারিবারিক যোগসূত্র। তাই, মৃত শিশুটির ঠাকুর্দা, ঠাকুমা ও জেঠিমাকে পুলিস প্রথমে আটক করে। জেরায় তাঁদের কথায় অনেক অসংগতি পেয়ে পুলিস অবশেষে ওই তিনজনকে গ্রেপ্তারই করেছে। 


    পুলিসের তিনটি দল ঘটনাটির তদন্ত করছে। পুলিস সূত্রের খবর, মূলত পারিবারিক যোগসূত্রকে সামনে রেখে তদন্ত করা হলেও অন্যকিছু বিষয়ও তদন্তের আওতায় রাখা হয়েছে। যেমন, শনিবার নিখোঁজ নাতিকে খুঁজে পেতে এক গুনিনের কাছে গিয়েছিলেন ঠাকুমা চায়না সাহা। আবার, মৃতের দাদু শম্ভু সাহা তাঁর বড়ছেলের বউ টুম্পাকে বিশেষ স্নেহ করতেন। ততটাই খারাপ সম্পর্ক ছিল মৃতের মা তথা ছোটবউমা সুপ্রিয়ার সঙ্গে। হুগলি গ্রামীণ পুলিস সুপার কামনাশিস সেন বলেন, ‘সমস্ত দৃষ্টিকোণ থেকেই তদন্ত করা হচ্ছে। এই মামলায় খুনের ধারা যোগ করছি আমরা। তবে ঠিক কী কারণে খুন হয়েছে, তা জানার চেষ্টা চলছে।’


    শনিবার সকাল ৮টায় মায়ের অনুমতি নিয়ে বাড়ির উঠোন লাগোয়া ঠাকুমার ঘরে গিয়েছিল স্বর্ণাভ। তারপর থেকে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। শনিবার বিরাট পুলিস বাহিনী, একাধিক পদস্থ পুলিস কর্তা ঘটনার তদন্তে আসেন। কিন্তু গভীর রাত পর্যন্ত শিশুটিকে পাওয়া যায়নি। ভোররাতে শিশুটির দাদু শৌচাগারে গিয়েই তাকে পড়ে থাকতে দেখেন! তখনই তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা তাকে ‘মৃত’ বলে ঘোষণা করেন। রবিবার রাতে ময়নাতদন্তের পর বাদাগাছিতে ফিরতেই বিরাট ভিড় জমে যায়। নৃশংস শিশুহত্যার ঘটনায় মৃতের বাবা-মায়ের পাশাপাশি পাড়াপড়শিদেরও অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন। 


    স্থানীয় সূত্রে অভিযোগ পাওয়া যায়, যাদব ও সুপ্রিয়া পরিবারের অমতে বিয়ে করেন। এজন্য শ্বশুর-শাশুড়ির প্রিয় নন সুপ্রিয়া। ছোটবউমার সঙ্গে শাশুড়ির নিয়মিত ঝগড়াঝাঁটি হতো। তাতে শাশুড়ির পক্ষ নিতেন বড়বউমা টুম্পা। দিনকয়েক আগেই দু’পক্ষের মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয়। তারপরই খুন হয়ে হল স্বর্ণাভ! তাই এই রহস্যকে কেন্দ্র করে ছড়িয়েছে নানা গুঞ্জন। 
  • Link to this news (বর্তমান)