গানবাজনা, গান তৈরির গল্প নিয়ে আসছে ‘জয়-লোপা এক্সপ্রেস’, কবে-কোথায় থেকে সেই যাত্রাশুরু?
আজকাল | ২৫ নভেম্বর ২০২৪
নিজস্ব সংবাদদাতা: এক অন্য ধারার গানের গাড়ি ছুটবে যার নাম ‘জয়-লোপা এক্সপ্রেস’। গানের মোড়ে, মোড়ে নানা স্টেশন ছুঁয়ে এগিয়ে চলবে এই 'এক্সপ্রেস'। এ গাড়ির আসার কথা ছিল এবছর দুর্গাপুজোর আগেই। একটু বিলম্ব হলেও গানে ভরপুর এই গাড়িতে চড়ে পড়লে এক সুন্দর গান সফরের সাক্ষী থাকবেন শ্রোতারা। ১৯৯৭ থেকে ২০০৭ সাল অব্দি টানা লোপামুদ্রার গানের আসরে সঙ্গত দিতেন জয়। মাঝে অনেকদিন একসঙ্গে স্টেজে ওঠেননি। তবে এবার ফের ঝমঝম করে চলা শুরু করবে জয়-লোপা এক্সপ্রেস। আগামী ২৯ নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩০টা নাগাদ দক্ষিণ কলকাতার জি.ডি.বিড়লা সভাঘর প্রেক্ষাগৃহের মঞ্চ থেকে ফের চলা শুরু হবে জয়-লোপা এক্সপ্রেস-এর।
এই প্রসঙ্গে লোপামুদ্রা মিত্র বললেন, “এ বছর ১৩ সেপ্টেম্বর আমাদের জয়-লোপা এক্সপ্রেস হওয়ার কথা ছিল। সে সময় করা সম্ভব হয়নি। ঠিক করেছিলাম বিশিষ্ট লোকসঙ্গীত শিল্পী ষষ্ঠী দাস বাউলের চিকিৎসার জন্য সেই অনুষ্ঠানটা করব, এভাবেই সন্মান জানাব ওঁকে। ওঁর কাছে আমি কিছু দিন গানও শিখেছিলাম। সেই জায়গা থেকে আমার সঙ্গে ষষ্ঠীদার একটা মানসিক সম্পর্কও ছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় ষষ্ঠী দাস বাউল নভেম্বর ৪-এ গত হয়েছেন। আমাদের এইটুকু সান্ত্বনা ওঁর চিকিৎসার জন্য কিছু অর্থিক সাহায্য আমরা করে আসতে পেরেছিলাম। অনুষ্ঠানের দিনক্ষণের জন্য আমরা অপেক্ষা করিনি। এই অনুষ্ঠানটা আমরা ষষ্ঠীদার স্মৃতির উদ্দেশে উৎসর্গ করছি ।”
লোপামুদ্রা মিত্র আরও বলেন, “জয়-লোপা এই জুটির ২৯ বছরে পা দিল।সেদিক থেকে আমাদের এক্সপ্রেস বহুদিন ধরেই চলছে, কিন্তু তা নিয়মিত নয়। জয় আগে গিটারিস্ট হিসেবে আমার গানে সঙ্গ দিত। তবে ওঁর ব্যস্ততা, সুরকার হয়ে ওঠার পর বহুদিন ধরে আমাদের একসঙ্গে আর গান-বাজনা করা হয়ে ওঠে না। দু’জনের রাস্তা দুজনের নিয়মে চলে। কিন্তু আমাদের মধ্যে একটা সঙ্গীতের সেতু বরাবর রয়ে গিয়েছে। তাছাড়া আমরা খুব ভাল বন্ধুও। আমিও একার অনুষ্ঠান করে আসছি, অন্যদিকে জয় স্টেজ শো তেমন করে না। সেই এই জায়গা থেকেই থেকেই এই একসঙ্গে পারফর্ম করার ভাবনা। এখানে জয়ও গাইবে, আমিও ওর সুরের গান গাইব। সঙ্গে থাকবেন বেশ কিছু অতিথি-যন্ত্রীরা। সব মিলিয়ে এই ‘জয়-লোপা এক্সপ্রেস’ দুটো ইঞ্জিন ন নিয়ে ছুটে চলবে।”
জয় সরকারের কথায়, “আসলে, লোপামুদ্রা মিত্রের হাত ধরেই সুরকার হিসাবে আমার আত্মপ্রকাশ। সেদিক থেকে দেখতে গেলে আমার সুরকার জীবনের পঁচিশ বছর পেরোল। বহু বছর একসঙ্গে মঞ্চে লোপাকে গিটারে সঙ্গত করেছি। সেটা তো এখন আর একেবারেই হয় না। সেই মুহূর্তগুলো বড্ড মিস করি। প্রবলভাবে মিস করতাম একসাথে মঞ্চে থাকার সেই উত্তেজনা, ভালোলাগা, পারফরম্যান্স শেষে ভাগ করে নেওয়া করতালির আওয়াজ। তাই,আমাদের এই 'জয়-লোপা এক্সপ্রেস।” অন্যদিকে, লোপামুদ্রা জানিয়েছিলেন, “এখনও অনেক গান গাওয়া বাকি। আমি মনে করি, গানের জন্য আমার আরও একটা জন্মের প্রয়োজন।”
চলতি বছর সমাজমাধ্যমে তাঁদের দু'জনের ফের একসঙ্গে মঞ্চে হাজির হয়ে পারফর্ম করার প্রসঙ্গে জয় সরকার লিখেছিলেন, “…পছন্দের গানবাজনা, আড্ডা আর সঙ্গে গান তৈরির গল্প, এই হল অনুষ্ঠানের মূল উপজীব্য। সেই কারণে মঞ্চ মাঝেমধ্যে হয়ে ওঠে আমাদের বাড়ির বৈঠকখানা। অতিভাগ্যবানরা সাক্ষী হয়ে যান দাম্পত্য কলহের। এই অনুষ্ঠানে আমাদের নিজেদের একসাথে করা কাজই থাকে সিংহভাগ। এছাড়াও লোপা যখন তখন তাক থেকে নামিয়ে ধুলো ঝেড়ে গেয়ে ফেলতে পারে বহুদিনের না গাওয়া কোনও সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, শক্তি চট্টোপাধ্যায় অথবা শঙ্খ ঘোষ। আমার গিটারে বেজে ওঠে রাগ যোগ অথবা ঝিঁঝিটের আলাপ। কখনও বা গেয়ে উঠি একসঙ্গে।”