রবিবার ভোরে হুগলির বলাগড়ে নিজের বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া শিশুটির দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বাড়ির শৌচালয় থেকেই তার দেহ পাওয়া যায়। মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে শুরু হয় তদন্ত। মৃত শিশুটির ঠাকুরদা, ঠাকুরমা এবং জেঠিমাকে আটক করে শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। টানা জিজ্ঞাসাবাদের পর শেষমেশ তাঁদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বলাগড় থানার অন্তর্গত গুপ্তিপাড়া বাধাগাছি এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকত স্বর্ণাভ সাহা (৪) নামে ওই শিশু। শনিবার সকালে ঠাকুরমার ঘরে খেলতে যাওয়ার নাম করে নিখোঁজ হয়ে যায় সে। শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, এর মাঝে হঠাৎ দুপুর নাগাদ শিশুটির ঠাকুরদা ঘর তালাবন্ধ করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। ফিরে আসেন প্রায় দু’ঘণ্টা পর। প্রতিবেশীদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, নাতিকে কখন খুঁজে পাওয়া যাবে তা জানতেই নাকি তান্ত্রিকের কাছে গিয়েছিলেন তাঁরা!
এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অরুণ দেবনাথ জানাচ্ছেন, দুপুরে হঠাৎই ঘরে তালা ঝুলিয়ে বেরিয়ে যান শিশুটির ঠাকুরদা শম্ভু সাহা। প্রায় দু’ঘণ্টা পর ফিরে এসে জানান, এক তান্ত্রিক নিদান দিয়েছেন, তাঁদের নাতিকে বিকেল ৪টে নাগাদ খুঁজে পাওয়া যাবে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। ওই তান্ত্রিকের সঙ্গে ঘটনার যোগসূত্রও খতিয়ে দেখছেন তাঁরা।
তবে শিশুমৃত্যুর ঘটনায় রহস্যের জট কাটছে না। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শিশুটির বাড়ির সামনে সারা রাত মোতায়েন ছিল পুলিশ। গোটা ঘরে তল্লাশি চালানো হয়েছিল। তখনও পর্যন্ত ঘরের কোথাও শিশুটির কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এর পর রবিবার ভোরের দিকে কিছু ক্ষণের জন্য শিথিল হয়েছিল প্রহরা। সেই সুযোগেই সম্ভবত শৌচাগারে শিশুটির দেহ ফেলে দেওয়া হয়। পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, শিশুটির দাদুই প্রথম মৃতদেহটি দেখতে পেয়েছিলেন। কিন্তু প্রৌঢ়ের দাবি, প্রথমে তিনি বুঝতে পারেননি সেটি তাঁরই নাতির দেহ! কেন নাতির দেহ চিনতে পারলেন না প্রৌঢ়, দিনভর খোঁজাখুঁজির মাঝে ঘর বন্ধ করে বেরিয়ে গেলেনই বা কেন, এখনও সে সবের সূত্র খুঁজছে পুলিশ। যদি শিশুটির দেহ বাড়ির শৌচালয়ের ভিতরেই পড়ে থাকে, তা হলে সকাল থেকে ওই শৌচালয় একাধিকবার ব্যবহার হওয়া সত্ত্বেও কী ভাবে দীর্ঘ ক্ষণ দেহটি সকলের অগোচরে থেকে গেল, তা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে। কী ভাবে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে, তা-ও এখনও স্পষ্ট নয়। ময়নাতদন্তের জন্য দেহটি চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।