হুগলির গুড়াপের চোপা গ্রামের ঘটনা। শিশুটির বাবা জানিয়েছেন, রবিবার সন্ধ্যায় তিনি বাজারে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে কন্যার খোঁজ শুরু করেন। কিন্তু কোথাও তাকে খুঁজে পাননি। ডেকে পাড়ার লোকজনকে জড়ো করেন তিনি। সকলে মিলে খুঁজতে খুঁজতে প্রতিবেশীর বাড়িতে শিশুটিকে পাওয়া যায়। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। গুড়াপ থানা থেকে পুলিশের একটি দল রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। রক্তাক্ত অবস্থায় ওই শিশুকে পাওয়া গিয়েছিল বলে জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা।
অভিযুক্ত যুবকের বাড়ি শিশুটির বাড়ির পাশেই। স্থানীয়দের দাবি, আগেও তাঁর বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু সেগুলি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধামাচাপা পড়ে গিয়েছে। অভিযুক্তের ফাঁসির দাবি করেছেন মৃত শিশুর বাবা-মা এবং প্রতিবেশীরা। শিশুটির বাবার কথায়, ‘‘আমি বাজারে গিয়েছিলাম। মেয়েটা পাশের বাড়িতে খেলতে গিয়েছিল। কখন যে ও মেয়েটাকে সরিয়ে নিয়েছে, আমরা কেউ জানি না। পাড়াসুদ্ধ সবাই মেয়েটাকে খুঁজলাম, পেলাম না। প্রতিবেশীদের সবাইকে জিজ্ঞেস করলাম। ও বলল, মেয়ে তো চলে গিয়েছে। তখনই সন্দেহ হয়েছিল। ওর ঘরে ঢুকে দেখি বিছানার মধ্যে আমার মেয়েটাকে মেরে কাঠ-কম্বল-মশারি দিয়ে চাপা দিয়ে রেখেছে। মেয়ে মাংস খেতে চেয়েছিল, মাংস আনতে বাজারে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমার মেয়েটা আর নেই।’’
স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘আমরা সন্ধ্যার পর থেকে সকলেই খোঁজাখুঁজি করছিলাম। এক জনকে সন্দেহ করা হয়। তাঁর বাড়িতে গিয়ে মেয়েটিকে পাওয়া যায়। ও বিবস্ত্র অবস্থায় ছিল। আমাদের ধারণা, বাচ্চাটাকে ধর্ষণ করে গলা টিপে মেরে দিয়েছে। কাঠ, কম্বল চাপা দিয়ে রেখে দিয়েছিল। ওর স্বভাব ছোট থেকেই খারাপ। নিজের মেয়ের সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করত। আগেও এমন কিছু ঘটনা ঘটিয়েছিল। পরে তা ধামাচাপা পড়ে যায়। আমরা ছ’মাসের মধ্যে ওর ফাঁসি চাই।’’
শিশুর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে গুড়াপ থানায় পকসো আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে ধনিয়াখালির সার্কেল ইনস্পেক্টরের উপর এর তদন্তভার ন্যস্ত করা হয়েছে। রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন হুগলির পুলিশ সুপার এবং অন্য উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সরকার বলেছেন, ‘‘অভিযুক্তকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তের জন্য বিশেষ একটি দল গঠন করা হয়েছে। সোমবার শিশুটির দেহের ময়নাতদন্ত হবে। অভিযুক্তকে চুঁচুড়া আদালতে হাজির করানো হবে এবং পুলিশ হেফাজত চাওয়া হবে। আইনত যা ব্যবস্থা নেওয়ার, তা নেওয়া হবে।’’