আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে অভিষেকের কন্যার বিরুদ্ধে কুরুচিকর মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছিল মাস দুয়েক আগে। সেই ঘটনায় দুই মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশি হেফাজতে তাঁদের উপর অত্যাচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ। যা নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন ওই দুই মহিলা। মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল উচ্চ আদালত। কিন্তু আগে রাজ্যের অফিসারদের সুযোগ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি উজ্জল ভূঞার বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয় সোমবার। আইপিএস অফিসার আকাশ মাঘারিয়ার নেতৃত্বে সিট গঠন করেছে আদালত। বিচারপতি জানিয়েছেন, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে সিটকে। অভিযোগকারিণী দুই মহিলাকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাও দিতে হবে।
এই মামলায় হাই কোর্টের সিবিআই তদন্তের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল রাজ্য সরকার। বিচারপতি কান্তের পর্যবেক্ষণ, প্রতি ঘটনায় সিবিআইকে তদন্তভার দেওয়ার প্রয়োজন নেই। রাজ্যের সংস্থাকে সুযোগ দেওয়া উচিত। শুরুতেই কেন সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হল? প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি।
অভিযোগকারী দুই মহিলার আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতি কান্তের মন্তব্য, ‘‘ইনস্পেক্টর এবং সাব ইনস্পেক্টরের বিরুদ্ধে অভিযোগ। আপনি কি মনে করেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে পারবেন না? দ্রুত তদন্ত শুরু হওয়া দরকার। এই ধরনের অপরাধে কোনও আইপিএস তদন্ত করতে পারবেন না বলে মনে করছেন কেন?’’
বিচারপতির আরও মন্তব্য, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ ক্যাডারের আইপিএস অফিসারেরা নিরপেক্ষ তদন্ত করতে পারবেন না, এটা প্রথমেই কেন মনে করে নেওয়া হচ্ছে? রাজ্যের অফিসারদেরও সুযোগ দেওয়া হোক। রাজ্যের পুলিশ কি এই তদন্ত করতে পারত না? সিবিআই একসঙ্গে কত তদন্ত করবে? তাদের হাতে তো আরও মামলা রয়েছে। এতে গোটা আইপিএস কুলের মনে হবে, সামান্যতম তদন্তও তাঁরা করতে পারছেন না।’’
অভিযোগকারীদের আইনজীবী সওয়ালে বলেন, ‘‘জেলের মধ্যে মহিলাদের মারধরের ঘটনা। তাকে স্বয়ং ডিজি বলছেন ‘কাল্পনিক’। এজি বলছেন ‘ভিত্তিহীন’। সেখানে রাজ্য পুলিশের কাছ থেকে কী ভাবে নিরপেক্ষ তদন্ত আশা করা যায়?’’
সুপ্রিম কোর্ট আগের দিন হাই কোর্টের সিবিআই তদন্তের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। আপাতত তা বহাল রাখা হয়েছে। আদালত জানিয়েছে, রাজ্য পুলিশকে আগে সুযোগ দিতে হবে। তারা ব্যর্থ হলে কেন্দ্রীয় সংস্থা এই ঘটনার তদন্ত করবে।