• দুর্বল সংগঠনের জন্যই তালডাংরায় হার দলের
    বর্তমান | ২৬ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: বিজেপি-র দুর্বল সংগঠনের জন্যই আমি তালডাংরায় পরাজিত হয়েছি। আমার জন্য বিজেপি হারেনি। আগে সংগঠন মজবুত করা প্রয়োজন। তার আগে বিজেপি নেতাদের আমার বিরুদ্ধে আঙুল তোলা উচিত নয়। সোমবার এভাবেই দলের নেতাদের পাল্টা তোপ দাগেন তালডাংরা উপ নির্বাচনের বিজেপি প্রার্থী অনন্যা রায় চক্রবর্তী। উল্লেখ্য, রবিবার বাঁকুড়া জেলা বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক তথা তালডাংরা বিধানসভা এলাকার বাসিন্দা বিপত্তারণ সেন সদ্য দলে যোগ দেওয়া বাঁকুড়া পুরসভার কাউন্সিলার অনন্যাকে প্রার্থী করা নিয়ে সরব হন। ‘শহুরে’ প্রার্থীকে তাঁদের উপর চাপিয়ে দেওয়ার কার঩ণেই দল জঙ্গলমহলের ওই আসনে পরাজিত হয়েছে বলে বিপত্তারণবাবু অভিযোগ করেন। এদিন বিষয়টি ‘বর্তমান’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তারফলে গেরুয়া শিবিরে শোরগোল পড়ে যায়। অনন্যাদেবী পাল্টা সরব হওয়ায় বিজেপি-র অভ্যন্তরীণ কোন্দল আরও প্রকট হল বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে। 


    এদিন অনন্যা বলেন, তালডাংরায় বিজেপি-র মজবুত সংগঠন ছিল বলে জানতাম। সেই কারণে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব গ্রহণ করি। কিন্তু, সংগঠনের হাল যে এমন নড়বড়ে হবে তা ভাবতে পারিনি। দুর্বল সংগঠনের কারণেই বিজেপি হেরেছে। আমার গায়ে ‘শহুরে’ ও ‘নবাগতা’ তকমা দিয়ে বিজেপি নেতারা পিঠ বাঁচাতে চাইছেন। তাছাড়া বিপত্তারণবাবুকে আমি প্রচার চলাকালীন একদিনও দেখতে পাইনি। তিনি সিমলাপালে মদের ব্যবসা করেন। ফলে তাঁকে তৃণমূলকে সন্তুষ্ট রাখতে হবে। তা না হলে তিনি ব্যবসা চালাতে পারবেন না। সেই কারণেই তিনি ওই ধরনের মন্তব্য করেছেন।


    এদিন বিপত্তারণবাবু বলেন, সিমলাপালে আমার হোটেল ব্যবসা রয়েছে। আমি মদ বিক্রি করি না। সবকিছু না জেনে অনন্যাদেবীর এভাবে সিনিয়র নেতাদের আক্রমণ করা উচিত নয়। দল আমাকে প্রচারের দায়িত্ব দেয়নি। তাই হয়তো উনি আমাকে দেখতে পাননি। তবে তালডাংরা বিধানসভায় আমাদের মজবুত সংগঠন রয়েছে। তা না হলে মাত্র ছ’মাস আগের লোকসভা নির্বাচনে আমরা বিপুল ভোট পেতাম না। উল্লেখ্য, অনন্যাদেবী বাঁকুড়া পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল কাউন্সিলার। তিনি ২০১৫-২০ সাল পর্যন্ত ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার ছিলেন। দল তাঁকে গত পুর নির্বাচনে টিকিট দেয়নি। ফলে তিনি নির্দল হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন। তাঁর স্বামী গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রতীকে জেলা পরিষদ আসনে লড়াই করেছিলেন। মাস তিনেক আগে অনন্যাদেবী বিজেপিতে যোগ দেন। তালডাংরা আসনের জন্য বিজেপি-র প্রাক্তন জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্রর নাম চূড়ান্ত হয়ে যাওয়ার পরেও অনন্যাদেবী কার্যত টিকিট ছিনিয়ে নেন। তারফলে তাঁকে বিজেপি-র বড় অংশই মেনে নিতে পারেননি। 


    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিজেপি নেতা বলেন, তালডাংরায় ভোটে দাঁড়ালেও অনন্যাদেবী শহর থেকেই প্রচারে যাতায়াত করছিলেন। ভোটের দিন তিনি কোনও বুথে পা রাখেননি। বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের ভোটে তিনি জিতে যাবেন বলে তাঁর অনুগামীরা প্রচার চালাচ্ছিলেন। বিষয়টি বিজেপি নেতাকর্মীরা ভালোভাবে নেননি। তা সত্ত্বেও দলের কর্মীরা তাঁর জন্য প্রচারে প্রাণপাত করেন। নেতারা ভোটও করিয়েছেন। সদ্য দলে যোগদান করিয়ে কাকে প্রার্থী করা হয়েছিল, তা রাজ্য নেতৃত্ব ভেবে দেখলে বিজেপি-র মঙ্গল।  ফাইল চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)