নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: ট্যাব কাণ্ডে শিলিগুড়িতে ফ্রিজ ৩৭টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। অধিকাংশ দিনমজুরের। কেউ রিকশ চালক, কেউ চায়ের দোকানদার, কেউ চা বাগান, আবার কেউ বালি খাদানের শ্রমিক। এদের অধিকাংশকে সহজে টাকা কামানোর টোপ দিয়ে অ্যাকাউন্ট ভাড়া নিয়েছিল ট্যাব কাণ্ডের মাস্টারমাইন্ডরা।
টানা তিন সপ্তাহ ধরে তদন্ত চালিয়ে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিস। তবে তারা ট্যাব কাণ্ডে এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে না পারলেও অন্যান্য জেলা পুলিস এখানে অভিযান চালিয়ে সাতজনকে পাকড়াও করেছে। এই অবস্থায় স্থানীয় পুলিসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
শিলিগুড়ির ডেপুটি পুলিস কমিশনার (পূর্ব) রাকেশ সিং বলেন, ট্যাব কাণ্ড নিয়ে তদন্ত চলছে। বেশকিছু ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। শীঘ্রই মূল অভিযুক্তদের পাকড়াও করা হবে।
শিলিগুড়িতে ট্যাব কাণ্ড নিয়ে একাধিক অভিযোগ হয়েছে। ইতিমধ্যে শহরের এনজেপি, হাকিমপাড়া, মাটিগাড়া ও বাগডোগরার পাঁচটি স্কুল অভিযোগ জানিয়েছে। অভিযোগ, পড়ুয়াদের ট্যাবের টাকা তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়েনি। সেই টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে। এমন অভিযোগ নিয়ে তদন্ত চালিয়ে চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য শিলিগুড়ি পুলিস হাতে পেয়েছে। ইতিমধ্যেই তারা বেশ কয়েকজনকে জেরাও করেছে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, সংশ্লিষ্ট অভিযোগগুলি সাইবার ক্রাইম থানায় নথিভুক্ত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট থানাকে এ ব্যাপারে তদন্তে সহযোগিতা করছে এসওজি ও ডিডি। যার নেতৃত্বে এডিসিপি পদমর্যাদার অফিসার আছেন। ইতিমধ্যেই অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখে ৩৭টি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। সেগুলিতে ট্যাবের টাকা পাঠানো হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত ফ্রিজ অবস্থায় রয়েছে ২ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা।
ঘটনার তদন্তের সঙ্গে জড়িত পুলিস অফিসারদের একাংশ জানান, ইতিমধ্যে নোটিস পাঠিয়ে ওসব অ্যাকাউন্ট হোল্ডারদের ডেকে জেরা করা হয়। তাঁদের অধিকাংশ জানিয়েছে, টোপ দিয়ে অ্যাকাউন্টগুলি ভাড়া নিয়েছিল কিছু ট্যাব কাণ্ডের মাথারা। আবার কেউ কেউ জানিয়েছেন, বিষয়টি তাঁরা জানতেনই না। তাই ট্যাব কাণ্ডের আসল মাথাদের গ্রেপ্তারের আগে ঘটনার সমস্ত দিক গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এক্ষেত্রে নিরীহ মানুষ যাতে না ফাঁসে সেই দিকটা লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।