রাত্রির সাথী প্রকল্পে এবার অন্তর্ভুক্ত রানাঘাট হাসপাতাল, বরাদ্দ ২৩ লক্ষ
বর্তমান | ২৭ নভেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: আরজি কর কাণ্ডের পর হাসপাতালে মহিলাদের নিরাপত্তায় ‘রাত্রির সাথী’ প্রকল্প চালু করেছিল রাজ্য সরকার। সমস্ত সরকারি হাসপাতালগুলিতে নার্সিং স্টাফ, চিকিৎসকদের জন্য পৃথক বিশ্রাম ঘর, শৌচালয়, মহিলা নিরাপত্তা কর্মী, নজরদারি ক্যামেরা সহ একাধিক বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছি এই প্রকল্পে। ইতিমধ্যেই নদীয়ার ছ’টি হাসপাতালের জন্য এই প্রকল্পে ৭৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছিল স্বাস্থ্যদপ্তর। সম্প্রতি রানাঘাট মহাকুমা হাসপাতালের জন্য বড় অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে নদীয়া জেলায় এই প্রকল্পে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ এক কোটির আশপাশে।
জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, আরজি কর কাণ্ডের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার হাসপাতালে রাতের নিরাপত্তার উপর জোর দেওয়া হয়। স্বাস্থ্যদপ্তরের পদস্থ কর্তাদের একটি বৈঠকে ‘রাত্রির সাথী’ শীর্ষক প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করাই এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য। জেলার অনেক হাসপাতালেই এতদিন নার্সিং স্টাফ, মহিলা চিকিৎসকদের জন্য পৃথক বিশ্রামকক্ষ ছিল না। ফলে, রাতে কর্তব্যরত অবস্থায় তাঁদের সমস্যায় পড়তে হতো। ‘রাত্রির সাথী’ সেই সমস্যা নিরসনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেবে বলে স্বাস্থ্যকর্তারা মনে করছেন।
এর আগে কল্যাণী গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতাল, নাকাশিপাড়া, চাকদহ, নবদ্বীপ ও শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল এবং তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালের জন্য ‘রাত্রির সাথী’ প্রকল্পে টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। সেই তালিকায় নাম ছিল না রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের। ৭৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে বাকি ছ’টি হাসপাতালে শুরু হয়েছিল প্রকল্পের কাজ। এবার আলাদা করে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের জন্য অর্থ বরাদ্দ করল নবান্ন। এবং সবচেয়ে বেশি টাকা পাচ্ছে এই হাসপাতাল।
রানাঘাট মহকুমা হাসপাতাল সূত্রের খবর, মোট দু’ দফায় ওই অর্থ বরাদ্দ হচ্ছে। সব মিলিয়ে পরিমাণ ২৩ লক্ষ টাকা। ৭৫ লক্ষ টাকা ছ’টি হাসপাতালের জন্য বরাদ্দ হলে এক একটি হাসপাতাল পাচ্ছে গড়ে সাড়ে ১২ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। সেক্ষেত্রে রানাঘাট হাসাপাতালের জন্য বরাদ্দ অর্থের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ। জানা গিয়েছে, এই টাকায় তৈরি হবে নতুন বিশ্রাম কক্ষ। কর্তব্যরত মহিলা চিকিৎসক, নার্সিং স্টাফ, মহিলা কর্মীরা সেখানে অবসর সময় কাটাবেন।
রানাঘাট মহাকুমা হাসপাতালের সুপার প্রহ্লাদ অধিকারী বলেন, ‘রাত্রির সাথি প্রকল্পটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হাসপাতালের নতুন ভবন ও পুরনো ভবনের মধ্যে যাতায়াতের জন্য একটি করিডর তৈরি হবে। ফলে, রাতে হাসপাতালে কর্মীদের এক বিল্ডিং থেকে অন্য বিল্ডিং এ যাওয়ার জন্য বাইরে বেরোতে হবে না। এছাড়াও হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়নে একগুচ্ছ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই হাসপাতালে চিকিৎসার মান অনেক উন্নত করা হয়েছে। আরও উন্নতির জন্য নিরন্তর প্রয়াস চলছে। পাশাপাশি, নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার বিষয়েও আমরা অত্যন্ত তৎপর।’