নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: মুর্শিদাবাদ জেলাজুড়ে শীতের শিরশিরানি অনুভব হলেও ডেঙ্গুর প্রকোপ কমছে না। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে ১৫ ডিগ্রির নীচে। তা সত্ত্বেও মশার উপদ্রবে নাজেহাল মানুষ। জেলাজুড়ে দৈনিক ৫০ জনের বেশি ডেঙ্গু আক্রান্তের হদিশ মিলছে। সোমবারই জেলায় ৫৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫২৪৩। মোট আক্রান্তের নিরিখে এই জেলা রাজ্যের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার আক্রান্তের সংখ্যা সার্বিকভাবে কম হওয়ায় কিছুটা স্বস্তিতে জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সন্দীপ সান্যাল বলেন, সোমবার পর্যন্ত জেলায় ৫২৪৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। সোমবারই ৫৭ জন আক্রান্ত হন। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা গড়ে ৫০জন। সার্বিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। ডেঙ্গুরোধের জন্য সমস্ত ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এবছর রানিনগর-১ ও ২, লালগোলা এবং সূতি-১ ও ২ ব্লকে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা সব থেকে বেশি। মশাবাহিত রোগ নিয়ে প্রথম থেকে তৎপর হয়েছে জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের পাশাপাশি মহকুমা ও ব্লক হাসপাতালে বহু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা চলছে। লালগোলার কৃষ্ণপুর রুরাল হাসপাতাল, সূতির মাহেশাইল রুরাল হাসপাতাল এবং রানিনগরের ইসলামপুর রুরাল হাসপাতালে এখনও প্রতিদিনই বহু ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হচ্ছে। চিকিৎসকরা তাঁদের উপরে কড়া নজর রাখছেন।
ইসলামপুরের এক চিকিৎসক বলেন, দু’সপ্তাহ আগে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিয়েছিল। তবে এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। কয়েকজন ডেঙ্গু রোগী এখানে ভর্তি থাকলেও সংখ্যায় আগের মতো নয়।
স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্লক ও মহকুমা হাসপাতালে বহু রোগীর চিকিৎসা চলছে। তবে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আগের তুলনায় রোগীর চাপ একটু কম। মঙ্গলবার মেডিক্যাল কলেজে ১৮ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। তারমধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্লক ও মহকুমা হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর অবস্থা সঙ্কটজনক হলেই তখন দ্রুত মেডিক্যাল কলেজে রেফার করে দেওয়া হচ্ছে।
হাসপাতালের এমএসভিপি অনাদি রায়চৌধুরী বলেন, পরিস্থিতি আগের থেকে অনেক ভালো। আগে যত রোগী ভর্তি হচ্ছিল এখন অনেকটাই কম। বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত ১৮ জন রোগী ভর্তি আছে। ভালোভাবে শীত পড়লে ডেঙ্গু একেবারে নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
এদিন জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের শীর্ষ আধিকারিকদের একটি দল ভগবানগোলা-১ ব্লকের কানাপুকুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিদর্শনে যায়। সেখানকার সামগ্রিক পরিস্থিতি রিভিউ করে। ওই দলে ছিলেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সহ অন্যান্যরা। সন্দীপবাবু বলেন, এটা আমাদের রুটিন পরিদর্শন। অন্যান্য ব্লকের হাসপাতালগুলিও আমরা পরিদর্শন করছি। সমস্ত ওয়ার্ড ঘুরে দেখলাম। যে সমস্ত রোগী ভর্তি আছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলে কী কী সমস্যা আছে জেনেছি। বিপিএইচসির চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গেও কথা বলা হয়েছে।