• লরির চাকায় পিষ্ট নাবালিকা, তপ্ত কৃষ্ণনগর শহর
    বর্তমান | ২৭ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি কৃষ্ণনগর: সোমবার রাতে কৃষ্ণনগরে পথ দুর্ঘটনায় নিলুফা খাতুন(১১) নামে এক নাবালিকার মৃত্যুকে ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। উত্তেজিত জনতা ট্রাফিক পুলিসের আউট পোস্ট ভাঙচুর করে। পুলিস লাইনের সামনে বিক্ষোভ দেখায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিস উত্তেজিত জনতার উপর ব্যাপক লাঠিচার্জ করে। তাতে বেশ কয়েকজন জখম হন। রীতিমতো রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় কৃষ্ণনগর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকা। পথচলতি মানুষের উপর পুলিসের লাঠিচার্জে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিসের দাবি, উত্তেজিত জনতা পুলিসকে লক্ষ্য করে ঢিল ছুঁড়ছিল।‌ সে জন্যই লাঠিচার্জ করা হয়। পাশাপাশি ঘাতক লরিটি পুলিস আটক করেছে। 


    কৃষ্ণনগর পুলিস জেলার এসপি অমরনাথ কে বলেন, উত্তেজিত জনতা পুলিসের উপর চড়াও হয়। পুলিসকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়ে। তাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিস লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হয়েছে। 


    সোমবার সন্ধ্যায় মামার সঙ্গে জুতো কিনতে বেরিয়েছিল নিলুফা। মামার স্কুটিতে চেপে কৃষ্ণনগর বাসস্ট্যান্ডের দিকে যাচ্ছিল। ট্রাফিক মোড় ঘুরতেই স্কুটিটি নিয়ন্ত্রণ হারালে দুজনই মাটিতে পড়ে যান। সে সময় পিছন থেকে আসা একটি লরি মামা ও ভাগ্নিকে পিষে দেয়। ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় নিলুফার। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুর্ঘটনার সেই দৃশ্য থেকে পথচলতি মানুষ হতচকিত হয়ে পড়েন।। 


    পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, নিলুফা কৃষ্ণনগরের মৃণালিনী গার্লস হাই স্কুলের সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত। মঙ্গলবার তার শেষ পরীক্ষা ছিল। কিন্তু তার আগেই এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাতে হলো ছোট্ট বৃষ্টিকে। তাঁর মা মমতাজ বিবি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, মেয়ে পড়াশোনা করে অনেক বড় হতে চেয়েছিল। কিন্তু ওর সেই স্বপ্ন পূরণ হল না।


    প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, নাবালিকার থেঁতলানো দেহ দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় পড়েছিল। যার জন্য আশেপাশের লোকজন আরও উত্তেজিত হয়ে পড়ে। উত্তেজিত জনতা ট্রাফিক মোড়ের কিয়স্কে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। তারপর তারা পুলিস লাইনের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। তখনই লাইনের ভিতর থেকে ফোর্স বেরিয়ে এসে উত্তেজিত জনতার উপর বেপরোয়া লাঠিচার্জ করতে থাকে। লাঠিচার্জের ফলে অনেকেই জখম হয়। পুলিসের লাঠির আঘাত থেকে রেহাই পায়নি পথচারীরাও।  মুহূর্তের মধ্যে কৃষ্ণনগর বাসস্ট্যান্ড চত্বর খালি করে দেওয়া হয়। ছত্রভঙ্গ করা হয় উত্তেজিত জনতাকে। এই ঘটনায় শহরজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। 


    প্রত্যক্ষদর্শী কাকলি সেন বলেন, এই ঘটনার প্রতিবাদে সকলে পুলিস লাইনের বাইরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল।  হঠাৎ করে ব্যারাক থেকে ফোর্স বেরিয়ে ব্যাপক লাঠিচার্জ করতে শুরু করে। লাঠির ঘায়ে অনেকেরই মাথা ফেটে গিয়েছে। আর এক প্রত্যক্ষদর্শী সুখেন ঘোষ বলেন, বাসস্ট্যান্ডের কাছে সিগনালিং এ অনেক ভুল রয়েছে। একটা বাচ্চা মেয়ের অকারণে মৃত্যু হল। তার প্রতিবাদ করার জন্য পুলিস বেধড়ক লাঠিচার্জ করল। তাতে বেশ কয়েকজন জখম হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)