নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: ট্যাব কাণ্ডে দার্জিলিং পুলিস ফ্রিজ করেছে ২৫২টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট পুলিস তদন্তের জন্য নোটিস ইস্যু করেছে ২০০টি। এদিকে, আরও ৪৩টি সন্দেহজনক অ্যাকাউন্টের হদিশ পেয়েছে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিস। তারা সেগুলি ফ্রিজ করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টগুলি বিহার, চোপড়া, মালদহে রয়েছে। এনিয়ে পুলিসের সন্দেহ, পাহাড় ও সমতলের ট্যাব কেলেঙ্কার সঙ্গেও বিহার, চোপড়া ও মালদহের সাইবার অপরাধীরা জড়িত। তবে পাহাড় ও সমতলের পুলিস এখনও কোনও অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
পুলিস অফিসাররা অবশ্য বলেন, রাজ্য সরকারের নির্দেশমতো ট্যাব কাণ্ড গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিয়ম মেনেই তদন্ত চলছে। কাজেই পুলিস হাতগুটিয়ে বসে নেই। পুলিসের ভূমিকা নিয়ে কোনও প্রশ্ন থাকতে পারে না। নিরীহ কোনও মানুষ যাতে এই ঘটনায় ফেঁসে না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখা হয়েছে।
পুলিস সূত্রে খবর, পাহাড়ের জিটিএ এলাকায় দু’টি অভিযোগ হয়েছে। একটি দার্জিলিং সদর এবং একটি কার্শিয়াংয়ে। সংশ্লিষ্ট দু’টি জায়গায় ২৪০ জন পড়ুয়ার টাকা গায়েব হয়েছে বলে অভিযোগ। এর বাইরে সমতলের ফাঁসিদেওয়া থানা অভিযোগ হয়েছে একটি। সেখানে প্রতারিতের সংখ্যা ১২ জন। সেই মতো দার্জিলিং জেলা পুলিস ২৫২ জনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে। সেগুলি বিহারের ঠাকুরগঞ্জ, পঠিয়া, উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়া ও ইসলামপুরের বিভিন্ন ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্টগুলি রয়েছে। ইতিমধ্যে নোটিস পাঠিয়ে তলব করা হয়েছে ২০০ জনকে।
দার্জিলিংয়ের পুলিস সুপার প্রবীণ প্রকাশ বলেন, ট্যাব কাণ্ডে সন্দেহজনক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। তদন্তের জন্য বেশ কয়েকজনের কাছে নোটিস পাঠানো হয়েছে। সিআইডির সঙ্গেও যোগাযোগ রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে, ট্যাব কাণ্ডে আরও ৪৩টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিশ পেয়েছে শিলিগুড়ি পুলিস। ইতিমধ্যেই ৩৭টি অ্যাকাউন্টের ২ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা ফ্রিজ করেছে। বিহারের ঠাকুরগঞ্জ, মালদহ, চোপড়ায় আরও ৪৩টি অ্যাকাউন্টের খোঁজ মিলেছে। সন্দেহজনক সেই অ্যাকাউন্টগুলি ফ্রিজ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কয়েকজনকে নোটিস পাঠিয়ে জেরা করা হয়েছে। শিলিগুড়ির ডেপুটি পুলিস কমিশনার (পূর্ব) রাকেশ সিং বলেন, ট্যাব নিয়ে সাইবার ক্রাইম থানার পুলিস তদন্ত করছে। ঘটনার সমস্ত দিক গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা সম্ভব নয়।
পাহাড় ও সমতল দুই জায়গার ঘটনার তদন্তে পুলিস অফিসাররা চাঞ্চল্য কিছু তথ্য পেয়েছেন। পুলিস সূত্রে খবর, নোটিস পেয়ে অনেকে থানায় হাজিরা দিয়েছেন।
কেউ কেউ জানিয়েছেন, টোপ দিয়ে অ্যাকাউন্ট ভাড়া নিয়েছিল সাইবার অপরাধীরা। আবার কেউ কেউ জানিয়েছেন, কৌশলে তাঁদের ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। তাঁরা সেই অ্যাকাউন্টের ব্যাপারে কিছু জানতেন না। চক্রের কয়েকজনের নাম মিলেছে। সেগুলি পুলিসের র্যাডারে আছে।