মূল্যবৃদ্ধি থেকে ১০০ দিনের কাজের বকেয়া নিয়ে প্রশ্ন, নাজেহাল পদ্ম শিবিরের নেতারা
বর্তমান | ২৭ নভেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: বারাসত, বসিরহাটে বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযান নিয়ে স্থানীয় নেতৃত্বের মধ্যে উদ্বেগ ছিল শুরু থেকেই। তার মধ্যে রাজ্যের ছ’টি বিধানসভার উপ নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবি হওয়ায় সদস্য সংগ্রহে আরও ‘ভাটা’ পড়েছে বলে দলের অন্দরে চর্চা শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে সদস্য সংগ্রহে বেরিয়ে ১০০ দিনের কাজের বকেয়া, রান্নার গ্যাস, পেট্রল ডিজেলের দাম বৃদ্ধি সহ একাধিক বিষয়ে মানুষের নালিশ শুনতে হচ্ছে বলে খবর। তবে প্রকাশ্যে এনিয়ে বিজেপির কোনও নেতা মুখ খুলতে রাজি নন। তাঁদের দাবি, উপ নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষ থেকে বিজেপি কর্মী- সমর্থক, কারও তেমন উৎসাহ ছিল না। তাই সদস্য সংগ্রহ ব্যাহত হওয়ার প্রশ্ন নেই।
২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে গোহারা হওয়ার পর থেকে রাজ্যজুড়ে বিজেপির পালে আর সেভাবে কখনওই হাওয়া লাগেনি। পরবর্তী সময়ে পুর নির্বাচন, পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে চব্বিশের লোকসভা ভোট—কোনও সময় বিজেপি আশানুরূপ ফল করতে পারেনি। গত লোকসভা ভোটে ভরাডুবির পর শুরু হয়েছে বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযান। এর আগে ২০১৯ সালে হয়েছিল বিজেপির এই কর্মসূচি। সেবারও বারাসত ও বসিরহাট অঞ্চলে সদস্য হতে মানুষের মধ্যে তেমন কোনও সাড়া দেখা যায়নি। এবার সেরকমই পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে উঠেছে উপ নির্বাচনে হারের পর। এমন হতাশাজনক ফলের কারণে অনেকে সদস্য হতে চাইছেন না বলে বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে। সেই সঙ্গে গ্রামীণ এলাকায় সদস্য সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রায়শই অস্বস্তিকর প্রশ্ন ও প্রসঙ্গের মুখে পড়তে হচ্ছে বিজেপি নেতাকর্মীদের। পেট্রল-ডিজেলের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি থেকে ১০০ দিনের কাজের টাকা কেন্দ্র যেভাবে আটকে রেখেছে, তা নিয়ে প্রশ্নবাণ সামলাতে হচ্ছে। দলের এক নেতার কথায়, ‘উপ নির্বাচনের একটা প্রভাব রয়েছে ঠিকই। পাশাপাশি মূল্যবৃদ্ধি, বকেয়া টাকা না পাওয়া নিয়ে কথা বলছে মানুষ। অনেকে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগছেন। তাই কিছুটা স্তিমিত হয়েছে সদস্য সংগ্রহের গতি।’ ওই নেতার দাবি, বিজেপির কর্মসূচি নিয়ে মানুষের মধ্যে উৎসাহ নেই বলে যেটা বলা হচ্ছে, সেটা স্পষ্টতই চক্রান্ত। বসিরহাটের বিজেপি নেতা পলাশ সরকার বলেন, ‘মানুষের মধ্যে আতঙ্ক রয়েছে। তার মধ্যেই এক লক্ষের কাছাকাছি সদস্য আমাদের হয়ে গিয়েছে। শেষ মুহূর্তে জোরকদমে আমরা কাজ চালাচ্ছি।’ ১০০ দিনের টাকা বা মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে তাঁদের সামনে কেউ ক্ষোভ দেখায়নি বলেই দাবি করেন তিনি। বারাসত বিজেপির সভাপতি তরুণকান্তি ঘোষ বলেন, ‘জেলায় উপ নির্বাচনের কোনও প্রভাব পড়েনি। যারা এসব বলছে, মিথ্যা কথা বলছে। আমরা চলতি মাসের মধ্যেই টার্গেট পূরণ করে ফেলব।’ এসব দেখে তৃণমূলের কটাক্ষ, ‘আসলে মানুষ বিজেপিকে চায় না। তাই ওদের প্রত্যাখ্যান করছে। আগামীতেও করবে।’