• তিনশো বিঘার শশাঙ্কের বিল বুজিয়ে উপনগরী গড়ার চেষ্টা
    এই সময় | ২৭ নভেম্বর ২০২৪
  • এই সময়, বর্ধমান: শহরের বুকে প্রায় ৩০০ বিঘা বিল বুজিয়ে আবাসন তৈরি করতে চাইছে প্রমোটাররা। ব্রিটিশ আমল থেকে শশাঙ্কের বিল নামে পরিচিত এই জলাভূমি বর্ধমানের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রীপল্লি, ইছলাবাদ ও আনন্দপল্লি— এই তিনটি এলাকা জুড়ে রয়েছে।

    দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় বিলের একাংশ মজে গিয়েছে আর একাংশ কব্জা করেছে জবরদখলকারীরা। তবে দীর্ঘদিন ধরে এই বিলই বন্যার হাত থেকে বর্ধমান শহরকে রক্ষা করে আসছে। শহরে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার দায়িত্বও পালন করে এই বিল। জীববৈচিত্র্যে ভরপুর এই জলাশয়ে প্রতি বছর ফিরে আসে পরিযায়ী পাখিরা। কিন্তু আর কি তারা ফিরবে? উঠেছে সেই প্রশ্নই।

    জানা গিয়েছে, একটি বড় প্রোমোটার সংস্থা এই বিলের চরিত্র বদল করে কয়েক কোটি টাকায় তা কিনে নিয়েছে। এখানে একটি বড় উপনগরী তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। এর জন্য বিভিন্ন মহলে টাকার অবৈধ লেনদেনও হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ‘দুর্নীতি’তে নাম জড়িয়েছে বর্ধমান পুরসভা এবং তৃণমূলের কয়েকজন নেতারও।

    কয়েক মাস আগেও পাম্প চালিয়ে বিল থেকে জল বার করে দেওয়া হয়। পরে মাটি কাটার কাজ শুরু হয় সেখানে। বিষয়টি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন এলাকার কয়েকজন। হাইকোর্টের নির্দেশে বন্ধ হয় কাজ। কিন্তু আবার যে কে সেই।

    এলাকা সূত্রে খবর, গত রবিবার থেকে রাতের অন্ধকারে ট্র্যাক্টর ও লরিতে রাবিশ এনে বিলে ফেলা হচ্ছে। বাসিন্দারা প্রতিবাদ করলে লরি ও ট্র্যাক্টর চালকরা হুঁশিয়ারির সুরে জানিয়ে দিয়েছেন, এই কাজ (বিল বোজানো) আগে বন্ধ হলেও, এ বার আর হবে না। এখানে আবাসন নির্মাণ হবেই। সব জেনেও পুলিশের কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ এলাকার বাসিন্দাদের।

    আরও গুরুতর অভিযোগ, ওই জলাভূমিকে শালি বলে ‌রেকর্ড করানো হয়েছে। এমনকী শালি জমিকে হাউজি়ং কমপ্লেক্স বলে ভূমি দপ্তরে কনভার্সনও করিয়ে দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, বর্ধমান পুরসভা সেই নথির ভিত্তিতে হোল্ডিং নম্বরও দিয়েছে ৪২ লক্ষ টাকা ফি জমা নিয়ে।

    চেয়ারম্যান পরেশচন্দ্র সরকার বলেন, ‘পুরসভার পক্ষ থেকে সমস্ত নথি খতিয়ে দেখে আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে। কোনও বহুতল নির্মাণের জন্য প্ল্যান তৈরির আবেদন পুরসভার কাছে জমা পড়েনি। আর বিষয়টি এখন হাইকোর্টের বিচারাধীন। সেখানে পুরসভার কিছু বলার নেই। নতুন করে বিল বোজানোর অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বুধবার আমি নিজে এলাকায় যাব।’
  • Link to this news (এই সময়)