নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: শনিবার সাড়ম্বরে পালিত হতে চলেছে ভিড়িঙ্গি শ্মশানকালীর ১৭৩তম বাৎসরিক উৎসব। এই উৎসব উপলক্ষে মন্দির প্রাঙ্গণে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। শ্মশানের পাঁচ মণ আধ পোড়া কাঠ ও পাঁচ সের সিঙ্গাপুরি ধুনোয় মহাযজ্ঞ হয় এই বাৎসরিক উৎসবে। তারাপীঠে যেমন মা তারার আগে বামাখ্যাপাকে ভোগ নিবেদন করা হয় এখানেও নাগাবাবা আত্মানন্দজিকে আগে ভোগ নিবেদন করা হয়। কারণ এই চত্বরকে সাধনক্ষেত্র গড়ে তুলেছিলেন ওই নাগাবাবা আত্মানন্দজি। এখানে মায়ের বিসর্জন নেই। শুধুমাত্র মায়ের মূর্তি বদল করা হয়। সেই সময় প্রতি বছর নিজে থেকেই পঞ্চশূল(বিশেষ ত্রিশূল) কেঁপে ওঠা দেখতে মন্দির চত্বরে তিল ধারণের জায়গা থাকে না। মন্দিরের প্রধান সেবাইত সাধন রায় বলেন, পঞ্চশূল বৈদ্যনাথধাম আমাদের এখানে ছাড়া আর কোথাও নেই।
১৭২ বছর আগে ভিড়িঙ্গির রায় পরিবারের সাধক অক্ষয়কুমার রায় নাগাবাবার শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। গুরু ও শিষ্যর চেষ্টায় ভিড়িঙ্গি শ্মশানে গড়ে ওঠে মায়ের মন্দির। এখন এই মন্দির শহরের মূল বাজারের মধ্যে অবস্থান করছে। দাহকার্য বহুকাল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। শনি ও মঙ্গলবার মন্দিরে ব্যাপক ভক্ত সমাগম হয়। প্রতি অমাবস্যায় নিশিপুজো দিতে ও দেখতে ভক্তের ঢল নামে।
এই কালীমূর্তির বিশেষত্ব রয়েছে। পাঁচ পুরুষ ধরে মাকালীর মূর্তি গড়ছেন আমরাইয়ের সূত্রধর পরিবার। এখন জয়রাম সূত্রধর ও তাঁর আত্মীয় পরিজনরা এই মূর্তি গড়ার কাজে ব্যস্ত। একই ভাবে ভিড়িঙ্গির হালদার পরিবার পূর্বপুরুষের আমল থেকে বলিদান করে আসছেন। শনিবার সকাল ৬টায় মূর্তি বদলের পর মহাযজ্ঞ হবে। তারপর শুরু হবে মায়ের পুজো। রাত ২টোয় নাগাবাবার সমাধিস্থল থেকে প্রসাদ বিতরণ হবে। যা সংগ্রহ করতে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসেন। রাত সাড়ে ৩টের পর মায়ের পুজোর প্রসাদ বিতরণ করা হবে। অষ্টমঙ্গলার দিন নরনারায়ণ সেবার আয়োজন করা হয়।