সংবাদদাতা, লালবাগ: বুধবার সকালে লালগোলা থানার দেওয়ানসরাই পঞ্চায়েতের সাগিয়া জগন্নাথপুরে পুকুরপাড় সংলগ্ন বাঁশবাগান থেকে এক বালকের মৃতদেহ উদ্ধার করল পুলিস। ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। পুলিস জানিয়েছে, মৃত বালকের নাম সুরজিৎ দাস (১১)। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লালবাগ মহকুমা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। মৃত বালকের পরিবারের দাবি, দুষ্কৃতীরা সুরজিৎকে অন্য কোথাও শ্বাসরোধ করে মেরে ভোররাতে পুকুরপাড় সংলগ্ন বাঁশবাগানে ফেলে রেখে গেছে। আরও দাবি, মেরে ফেলার আগে দেহের একাধিক জায়গায় বিড়ি বা সিগারেটের ছ্যাঁকা দেওয়া হয়। ভগবানগোলা এসডিপিও উত্তম গড়াই বলেন, এখনই মৃত্যুর কারণ নিয়ে স্পষ্ট কিছু বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পরেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। মৃতের পরিবার লালগোলা থানায় খুনের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে এখনও কেউ আটক বা গ্রেপ্তার হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাগিয়া জগন্নাথপুরের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ দাস পেশায় গাড়িচালক। তাঁর দুই ছেলের মধ্যে সুরজিৎ বড়। সে জগন্নাথপুর হাইস্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিল। মঙ্গলবার বেলা আড়াইটে নাগাদ স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে খাওয়াদাওয়া করে বেরিয়ে যায়। তারপর আর বাড়ি ফেরেনি। বুধবার সকালে বাড়ি থেকে দেড়শো মিটার দূরে পুকুরপাড় সংলগ্ন বাঁশবাগানের মধ্যে ওই বালককে পড়ে থাকতে দেখা যায়। খবর পেয়ে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তাঁরাই লালগোলা থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিস এসে উদ্ধার করে কৃষ্ণপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুর খবর শোনার পরেই মা সাবিত্রী দাস বার বার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছিলেন। তিনি বলেন, দুপুরে স্কুল থেকে ফিরে ভাত খেয়ে বাড়ি থেকে বেরয়। বিকেল পাঁচটায় টিউশন ছিল। সাড়ে চারটার পরেও ফিরে না আসায় খুঁজতে বেরই। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজির পর হদিশ না পাওয়ায় স্বামীকে ফোন করি। আমার ছেলেকে যারা নির্মমভাবে খুন করেছে তাদের ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি। মৃতের বাবা বিশ্বজিৎ দাস বলেন, কাজের সূত্রে লালগোলার বাইরে ছিলাম। খবর পেয়ে ছুটে আসি। অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও পাইনি। বাড়ির পাশের পুকুরে ডুবে যেতে পারে এই আশঙ্কায় রাতে পুকুরে নেমে খুঁজেছি। কিন্তু কোথাও খুঁজে পাইনি। দুষ্কৃতীরা ছেলেকে অপহরণ করে কোথাও লুকিয়ে রেখেছিল। পরে খুন করে ভোররাতে বাঁশবাগানে ফেলে রেখে গেছে। পুলিস ছেলের খুনিকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিক। এলাকার মানুষও খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।