• মর্মান্তিক! খড়ের গাদায় খেলার সময় আগুন, ঝলসে মৃত্যু শিশুর
    বর্তমান | ২৮ নভেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, নকশালবাড়ি: খেলার ছলে খড়ের গাদায় আগুন দিয়েছিল দুই শিশু। সেই আগুনেই পুড়ে মৃত্যু হল একজনের। বুধবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে শিলিগুড়ি মহকুমার ফাঁসিদেওয়া ব্লকের বিধাননগরে। ছেলের আকস্মিক মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছে গোটা পরিবার। এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। পুলিস জানিয়েছে, মৃতের নাম গুডবিন নাগ (৪)। বিকেলেই দেহ ময়নাতদন্তের জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় পুলিস। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিস জানতে পেরেছে, খেলার সময় দুই শিশুই আচমকা খড়ের গাদায় আগুন ধরিয়েছিল। তার থেকেই এমন মর্মান্তিক ঘটনা।


    বিধাননগরের সৈয়দাবাদে ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুপুরে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পর গুডবিন তার বছর পাঁচেকের মামাতো ভাইয়ের সঙ্গে খেলার জন্য বাড়ির বাইরে যায়। বাড়ির কাছে ধান খেতে দুই ভাই খেলতে থাকে। সম্প্রতি জমির ধান কাটা হয়েছে। ধান ঝাড়াইবাছাই করে খড়ের গাদা বানিয়ে রাখা আছে। সেখানেই দু’জন খেলছিল। আচমকা আগুন লাগায় তারা। একজন বের হতে পারলেও গুডবিন গাদার মধ্যেই ফেঁসে যায়। খড়ের আগুন দ্রুত ছড়িয়ে গেলে গোটা শরীর পুড়ে যায় গুডবিনের। এতেই প্রাণ হারায় চার বছরের শিশুটি। 


    আগুন লাগার বিষয়টি জানাজানি হতেই আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে তা নেভানোর চেষ্টা করে। স্থানীয় বাসিন্দা রাজু এক্কা বলেন, আমার নাতি ছুটে এসে বলে খড়ের গাদায় একটি বাচ্চা জ্বলছে। শুনেই তড়িঘড়ি সেখানে যাই। বাঁশ দিয়ে জ্বলতে থাকা খড় সরিয়ে শিশুটিকে কোনওক্রমে উদ্ধার করি। ততক্ষণে সব শেষ। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, খেলার সময় দুই শিশুই খড়ের গাদায় আগুন ধরিয়েছিল। মৃত শিশুর মা সুচিতা লাকড়া নাগ বলেন, স্কুল থেকে ফিরেই ছেলে খেলার জন্য বেরিয়ে যায়। আমি ওকে ঘরে থাকতে বলেছিলাম। কিন্তু মানেনি। এরপর ব্যাঙ্কের কাজের জন্য ভাইয়ের সঙ্গে বিধাননগর চলে যাই। এমন কিছু যে হবে, স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি। 


    স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য দিপি ঘোষ খান বলেন, মর্মান্তিক ঘটনা। আমরা সকলেই মর্মাহত। খবর পেয়ে বিধাননগর তদন্ত কেন্দ্রের পুলিস গ্রামে আসে। নকশালবাড়ির এসডিপিও নেহা জৈন, সিআই (নকশালবাড়ি) সৈকত ভদ্রও ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। এসডিপিও বলেন, তদন্তে জানতে পেরেছি, দুই শিশু খেলার সময় দেশলাই দিয়ে খড়ের গাদায় আগুন ধরিয়েছিল। সেখানেই একটি শিশু আটকে পড়ে। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে আসি। তবে শিশুটিকে কোনওভাবেই বাঁচানো সম্ভব হয়নি। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত চলছে।  (ঘটনা তদন্তে পুলিস। - নিজস্ব চিত্র।)
  • Link to this news (বর্তমান)