'ধর্মের উপর অত্যাচার মানতে পারি না,' বাংলাদেশ ইস্যুতে মুখ খুললেন মমতা
আজ তক | ২৮ নভেম্বর ২০২৪
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আজ, বৃহস্পতিবার বিধানসভায় মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন বিধানসভা অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের সঙ্গে তিনি একমত। তাঁর কথায়, ‘বাংলাদেশ নিয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারি না।’ কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানিয়ে তিনি স্পষ্ট করেছেন, পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে কেন্দ্রের নেওয়া সিদ্ধান্ত মেনে চলাই রাজ্যের অবস্থান। তবে ধর্মের ওপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে নিজের দৃঢ় অবস্থানও তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিধানসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মমতা বলেন, “বাংলাদেশ নিয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। এটি কেন্দ্রীয় সরকারের বিষয়। কিন্তু আমি ধর্মের ওপর অত্যাচার মানতে পারি না।” বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হওয়া অত্যাচার নিয়ে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং জানান, কলকাতার ইসকনের প্রধানের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
ওয়াকফ বিলের বিরোধিতা
এদিন কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাবিত ওয়াকফ বিলের বিরুদ্ধেও সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর মতে, এই আইন কার্যকর হলে ওয়াকফ ব্যবস্থার উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা ধ্বংস হবে। মমতা বলেন, “রাজ্যের সঙ্গে কোনও আলোচনার ব্যবস্থা ছাড়াই কেন্দ্র এই বিল নিয়ে এসেছে। শুধু একটি নোটিফিকেশনের মাধ্যমে আমাদের আপত্তির সুযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনও আলোচনা হয়নি।”
মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, কেন্দ্রের এই ধরনের একতরফা পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে সমস্যা সৃষ্টি করছে। রাজ্যও ওয়াকফ সম্পত্তি পরিচালনা করে, তাই এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত ছিল রাজ্যের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করা।
বাংলাদেশ প্রসঙ্গে মমতার কৌশল
বাংলাদেশের রাজনৈতিক এবং সামাজিক পরিস্থিতি নিয়ে সরাসরি কিছু বলতে না চাইলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিষ্কার করে দিয়েছেন যে এই বিষয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করবেন। তবে, তিনি নিজের মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ধর্মের ওপর অত্যাচারের তীব্র বিরোধিতা করেছেন।
পরিষ্কার বার্তা
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য রাজ্যের অবস্থানকে একদিকে কেন্দ্রের নীতি মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দেয়, অন্যদিকে মানবাধিকারের প্রশ্নে তাঁর দলীয় অবস্থানকে স্পষ্ট করে তোলে। বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের বিষয়ে তাঁর সংবেদনশীলতা এবং কেন্দ্রের সঙ্গে সহযোগিতার মনোভাব রাজ্যের পররাষ্ট্রনীতিতে ভারসাম্য বজায় রাখার ইঙ্গিত দেয়।