• শহর কাঁপছে চাকার দাপটে, রাশ টানতে শুরু টোটো-শুমারি...
    ২৪ ঘন্টা | ২৮ নভেম্বর ২০২৪
  • বিধান সরকার: আদমশুমারি, অর্থনৈতিক-শুমারি কিংবা আবাসনশুমারি এই সমস্ত গণনা সম্পর্কে আমরা সবাই ওয়াকিবহাল। কিন্তু হঠাৎ করে কেউ আপনাকে বলে শুরু হয়েছে 'টোটো-শুমারি'। চন্দননগর কর্পোরেশন শুরু করেছে টোটো-শুমারি। শহরে কত টোটো চলে তার সংখ্যা জানতে এই শুমারি বলে কর্পোরেশন জানালেও পুরসভার এক্তিয়ার নিয়ে বিতর্ক।

    গত ২৬ তারিখ থেকে চন্দননগর কর্পোরেশন এলাকায় টোটো গণনার জন্য চারটি ক্যাম্প করা হয়। ফর্ম পূরন করতে বলা হচ্ছে টোটো চালকদের। নাম ঠিকানা আধার কার্ড ভোটার কার্ড নম্বর দিতে হচ্ছে। আগামী ৩০ তারিখ পর্যন্ত চলবে এই কাজ। চন্দননগর কর্পোরেশনের মেয়র রাম চক্রবর্তী জানিয়েছেন, 'শহরে কত টোটো চলে তা জানতে এই গণনা চলছে। ৩০ তারিখের পর আর নতুন করে কেউ রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে না। পরিবহন দপ্তর ও প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার পর এই কাজ শুরু হয়েছে। ধাপে ধাপে সব জায়গাতেই হবে। যারা টোটো চালান অনেক সময় দেখা যায় তাদের বয়স আঠেরো হয়নি অথবা ষাটের উপর বয়স। তাদের নিয়ে ভাবতে হবে। শহরের বাইরের কোনো লোক টোটো চালাতে পারবেন না।'

    প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী অগাস্ট মাসেই নির্দেশ দিয়েছিলেন যে 'বেলাগাম' যানকে লাগামে আনতে হবে। সেই লক্ষ্যেই তৎপর হয়েছিল রাজ্যের পরিবহণ দফতর। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে, রাজ্যের জেলায় জেলায় টোটো শুমারির নির্দেশ দেওয়া হয়। তারপর সব টোটোতে 'QR Code' বসার কথা ছিল। কিন্তু এখনও পুরোপুরি কার্যকরী হয়নি নিয়ম। কিন্তু এবার চন্দননগর কর্পোরেশনে শুরু করেছে সেই কাজ। যদিও সেটা নিয়েও শুরু হয়েছে বিতর্ক। চন্দননগর ই-রিক্সা সমন্বয় সমিতি মেয়রকে স্মারকলিপি দিয়েছে। তাদের দাবী, নতুন করে টোটো না নামুক পুরোনো যারা রয়েছে তাদের যেন রুজিরুটির ক্ষতি না হয়।

    টোটোর ফলে শহরে যানজট তৈরী হচ্ছে। প্রতিদিনই রাস্তায় নামছে নতুন নতুন টোটো। তাতে লাগাম দিতে চাইছে প্রশাসন। টোটো বা ই-রিক্সা চালকদের কোনো লাইসেন্স নেই, কোনো রেজিষ্ট্রেশন নেই, ইনস্যুরেন্সও নেই। ফলে দূর্ঘটনা ঘটে বীমার সুবিধা পায় না যাত্রীরাও। সরকারী অনুমতি প্রাপ্ত কারখানা ছাড়াও লেদে টোটো তৈরী হচ্ছে তাতে বিপদের ঝুঁকি থাকে। হুগলির এক ই-রিক্সা তৈরীর কর্নধার সেখ নাসিরুদ্দিন বলেন, 'টোটো পুরোপুরি অবৈধ। কারণ এগুলো সরকার স্বীকৃত কোনো সংস্থার নয়। স্থানীয় লেদ বা গ্যারাজ থেকে তৈরী। সেই টোটো প্রচুর চলছে। আর ই-রিক্সাও প্রচুর চলছে, যা পরিবহণ দপ্তর আইন মেনে স্বীকৃত সংস্থা তৈরী করে। গণনা যে কেউ করতে পারে তবে তাদের রেজিস্ট্রেশন কী করে হবে সেটা ভাবা উচিত। আমরাও চাই স্বচ্ছ ভাবে ই-রিক্সা চলুক।'

    মেয়র রাম চক্রবর্তী বলেন,'আমাদের সরকার মানবিক কোন লোকের রুজিরুটি বন্ধ হয়ে যাক সেটা চাই না।' চালকরা জানান,কোনো নির্দিষ্ট রুট না থাকায় সব জায়গায় টোটো চলছে। এত বেশি টোটো হয়ে গেছে তাতে সমস্যা হচ্ছে চালকদেরও। যাদের প্রয়োজন তারা চালাক। যারা টোটো চালায় না অথচ অনেক টোটো কিনে ভারা খাটায় তাদের নিয়ে ভাবুক সরকার।'

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)