এই সময়: ব্যাঙ্ক লুটের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরে কেটে গিয়েছে ৭২ ঘণ্টা। মহেশতলার বাটা মোড়ে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে লুটপাটের ঘটনায় বুধবার পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারল না। তবে ব্যাঙ্কের মেন গেট ও ভল্টের চাবি নকল করে টাকা–গয়না লুট হয়েছে— এই তত্ত্বে মোটের উপর তদন্তকারীরা নিশ্চিত হওয়ায় চাবিওয়ালার খোঁজে হন্যে হয়ে ঘুরছে পুলিশ। পুলিশের নজর রয়েছে কলকাতার কয়েকজন চাবিওয়ালার উপর।
কারণ, মহেশতলা সংলগ্ন একাধিক গ্রামীণ এলাকা থেকে প্রতি দিন বেশকিছু তালা–চাবির কারিগর কলকাতায় আসেন বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। এই চাবিওয়ালারা ডুপ্লিকেট চাবি তৈরির কাজে অত্যন্ত দক্ষ। কলকাতার চাঁদনি মার্কেট, নিউ মার্কেট, এন্টালি মার্কেট–সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় এই চাবিওয়ালাদের মূলত দেখা যায়। এই চাবিওয়ালাদের কাউকে কাউকে চিহ্নিত করে ঘটনার কিনারা করা যেতে পারে বলে তদন্তকারীরা মনে করছেন।
গত সোমবার দক্ষিণ শহরতলির মহেশতলার বাটা মোড়ে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা থেকে নগদ ৭৫ লক্ষ টাকা এবং ভল্ট থেকে কয়েক ভরি গয়না লুটের অভিযোগ ওঠে। তদন্তে নেমে পুলিশ নিশ্চিত হয়, ব্যাঙ্কের দরজা এবং ভল্ট চাবি দিয়ে খুলে এই লুট হয়। চাবিওয়ালাদের কাছ থেকে ডুপ্লিকেট চাবি বানিয়ে লুটেরারা এই কাজটি হাসিল করেন। তথ্য লোপাটের জন্য হানাদাররা ব্যাঙ্কের ডিজিটাল ভিডিয়ো রেকর্ডার (ডিভিআর) নিয়ে যায়। ফলে সিসিটিভি ফুটেজও পাননি তদন্তকারীরা। তাই দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করার ক্ষেত্রেও সমস্যায় পড়েছেন গোয়েন্দারা।
ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের কথায়, ‘তদন্তের স্বার্থে সব দিক খুলে রেখেই এগনো হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের আধিকারিক ও কর্মীদের উপরেও নজর রাখা হচ্ছে।’ তদন্তকারীরা মোটের উপর নিশ্চিত, এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের কেউ যুক্ত থাকতে পারেন। সেই কারণেই তাঁদের ধারণা, ডুপ্লিকেট চাবি তৈরির রহস্য উদ্ধার করতে পারলেই এই ঘটনার দ্রুত কিনারা করা যাবে।
পুলিশের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, সাধারণত এই ধরনের লুটের ক্ষেত্রে দরজা এবং ভল্ট ভেঙেই কাজ হাসিল করে থাকে অপরাধীরা। এই ক্ষেত্রে তা করা হয়নি। এর পিছনে ব্যাঙ্কের কর্মী–আধিকারিকদের একাংশের জড়িত থাকার সম্ভাবনা বেশি বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। মহেশতলা থেকে কলকাতা পর্যন্ত চাবিওয়ালাদের একটি তালিকা তৈরি করে তদন্তকারীরা জানতে চাইছেন, এই সময়ের কাছে কে বা কারা তাঁদের কাছে ডুপ্লিকেট চাবি তৈরির জন্য এসেছিলেন।