পুলিশ ও সেনাবাহিনী সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে সুকনা ত্রিশক্তি কর্পসের গোয়েন্দাকর্তারা, কেন্দ্রীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল ও দার্জিলিং জেলা পুলিশের অন্তর্গত পানিঘাটা ফাঁড়ির পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে ফ্রান্সিসকে গ্রেফতার করেছে। অভিযোগ, ধৃত ব্যক্তি বেশ কিছু দিন ধরেই দেশবিরোধী কার্যকলাপে যুক্ত। গোয়েন্দা সূত্র মারফত সে রকম খবর পেয়েই অভিযান চালানো হয়। ধৃতের কাছ থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁর বাড়ি থেকে ক্যালিফোর্নিয়াম নামে এক ধরনের তেজস্ক্র য় পদার্থ মিলেছে। বৃহস্পতিবার ফ্রান্সিসকে কার্শিয়াং আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারকের নির্দেশে ধৃতকে পাঁচ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে পেয়েছেন গোয়েন্দারা।
দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার প্রবীণ প্রকাশ বলেন, ‘‘সেনাবাহিনীর তথ্য ধরেই ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাড়ি সিল করা হয়েছে। বাড়ি থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি ও রাসায়নিক পদার্থ মিলেছে। সেগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেনাবাহিনীও সেটা খতিয়ে দেখছে।’’ কার্শিয়াঙের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেক রায় বলেন, ‘‘কিছু নথি ও সামগ্রী পরীক্ষার জন্য নিয়েছে সেনাবাহিনী। ধৃতের বাড়িতে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।’’
সেনাবাহিনী সূত্রে খবর, ঘণ্টাখানেকের অভিযানে ধৃতের বাড়ি থেকে ‘ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজ়েশন’-এর বেশ কিছু নথি উদ্ধার হয়েছে। অনুমান, ওই সব নথি পাচারের চেষ্টা করছিলেন ফ্রান্সিস। তবে বাড়ি থেকে ক্যালিফোর্নিয়াম উদ্ধার হওয়ায় ‘স্তম্ভিত’ গোয়েন্দারা। সেনাবাহিনী সূত্রে দাবি, ওই তেজস্ক্রিয় পদার্থ ২০১৫ সালে চুরি গিয়েছিল! মাস তিনেক আগে বিহার থেকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল তিন জনকে। তাঁদের কাছ থেকেও ওই তেজষ্ক্রিয় পদার্থ মিলেছে বলে দাবি। সেনাবাহিনীর এক কর্তার দাবি, আন্তর্জাতিক বাজারে এক গ্রাম ক্যালিফোর্নিয়ামের মূল্য প্রায় ১৭ কোটি টাকা। ফ্রান্সিসের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া ওই ক্যালিফোর্নিয়াম ‘ডিপার্টমেন্ট অফ অ্যাটমিক এনার্জি’তে পাঠানো হয়েছে।
অমৃতা এবং ফ্রান্সিস বেলগাছি চা-বাগানের স্থায়ী শ্রমিক ছিলেন। এর পর গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে পঞ্চায়েত সমিতির ভোটে তৃণমূলের টিকিটে লড়েছিলেন অমৃতা। জিতেওছেন। বর্তমানে তিনি পঞ্চায়েত সমিতির অচিরাচরিত শক্তির কর্মাধ্যক্ষ। স্থানীয় সূত্রে খবর, নির্বাচনে জয়ের পরেই চা-বাগানের কাজ ছেড়ে দেন দু’জন। তবে চা-বাগানের কোয়ার্টারেই থাকছিলেন তাঁরা। বিহারে ধৃত তিন জনের সঙ্গে ফ্রান্সিসের কোনও যোগ রয়েছে কি না, সেটাই এখন খতিয়ে দেখছে পুলিশ।