তৃণমূল সূত্রের খবর, বিষয়টি বুঝতে পেরে তালিকায় ব্রাত্য মুখপাত্রদের সঙ্গে দিল্লি থেকে টেলি কনফারেন্স করে কথা বলেছেন রাজ্যসভার এক সাংসদ। দলের প্রথম সারির এক নেতার ‘দূত’ হয়েই তিনি সেই ফোন করেছিলেন বলে খবর। বাদ পড়া মুখপাত্রদের কেউ অবশ্য এ নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও কথা বলতে চাননি। তবে তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, তালিকা থেকে বাদ পড়া মুখপাত্রদের কনফারেন্স কল-এ বার্তা দেওয়া হয়েছে, ‘অভিমান’ না করে দলের পাশে থাকতে। ওই সিদ্ধান্তকে এখনই ‘চূড়ান্ত’ হিসাবে ধরে না নেওয়ার বার্তাও দেওয়া হয়েছে বলে খবর। সূত্র মারফত এ-ও জানা যাচ্ছে যে, ওই ‘প্রাক্তন’ মুখপাত্রদের বলা হয়েছে, তালিকা থেকে তাঁদের নাম বাদ পড়ায় দলীয় নেতৃত্বের একটি অংশ ‘স্তম্ভিত’!
মুখপাত্রদের তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন কলকাতার ৯৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তী। একই ভাবে বাদ পড়েছেন ঋজু দত্ত, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রথম সারির নেতা সুদীপ রাহা, কোহিনুর মজুমদারেরা। সোমবার তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছিল, সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সমন্বয়ের বিষয়টি দেখবেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। ঘটনাচক্রে, কাউন্সিলর অরূপ টালিগঞ্জ এলাকারই পুরপ্রতিনিধি, যে এলাকা মন্ত্রী অরূপের বিধানসভা কেন্দ্র। আবার কোহিনুরও টালিগঞ্জ এলাকারই নেতা। বাদ পড়ার পরে অরূপ এবং সুদীপ— দু’জনেই প্রকাশ্যে তাঁদের অনুযোগ ব্যক্ত করেছেন। অরূপ বলেছেন, দলের ‘কঠিন’ সময়ে (আরজি কর-কাণ্ড এবং তৎপরবর্তী নাগরিক আন্দোলন) তিনি দলকে ‘রক্ষা’ (ডিফেন্ড) করেছেন। তার পরেও তাঁর নাম মুখপাত্রদের তালিকা থেকে বাদ যাওয়ায় তিনি ক্ষুণ্ণ। সুদীপ বলেছিলেন, ‘‘পদে থাকি বা না থাকি, দলের আপদে-বিপদে ছিলাম, আছি এবং থাকব।’’
মূলত এই কয়েকটি নাম নিয়েই তৃণমূলে আলোচনা শুরু হয়েছিল। ঘটনাচক্রে, যাঁরা মুখপাত্রদের তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন, তৃণমূলের অন্দরে তাঁরা বেশির ভাগই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন’ বলে পরিচিত। ফলে তাঁদের বাদ পড়াকে দলের অনেকেই তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের সর্বশেষ সমীকরণের নিরিখে দেখতে চাইছেন।
ইতিমধ্যেই নতুন তালিকার ভিত্তিতে তৃণমূলে একটি হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি হয়েছে। যার নাম ‘এআইটিসি বেঙ্গল মিডিয়া প্যানেল’। তবে তৃণমূলের একটি অংশের বক্তব্য, এখন যে মুখপাত্রদের তালিকা রয়েছে, তাতে আরও কিছু নাম যুক্ত হবে। সেটা দলের নেতৃত্বের ভাবনার মধ্যে রয়েছে। সেই তালিকায় বাদ পড়ারা জায়গা পেতে পারেন বলেও অনেকের বক্তব্য। তবে মুখপাত্রদের কয়েক জনের বাদ যাওয়ার ঘটনার তরঙ্গ যে দিল্লি পর্যন্ত পৌঁছেছে, তা ওই কনফারেন্স কলেই স্পষ্ট।