পেট্রোলিয়াম বা খনিজ তেল বিবেচিত হয় দেশের সম্পত্তি হিসাবে। তবে কোনও রাজ্যের মাটির তলায় এই সম্পদ থাকলে কেন্দ্রকে সেখানে খননের জন্য রাজ্যের কাছ থেকে পেট্রোলিয়াম মাইনিং লিজ় (পিএমএল) সংগ্রহ করতে হয়। ২০২০ সালে অশোকনগর থেকে খনিজ তেল উত্তোলনের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে পিএমএলের আবেদন জানায় খনিজ তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস কর্পোরেশন (ওএনজিসি)। অভিযোগ, চার বছর পেরিয়ে গেলেও পিএমএল দেয়নি রাজ্য সরকার। সূত্রের খবর, ওই সংক্রান্ত অনুমতি চেয়ে কেন্দ্রের তরফে মোট ১৯টি চিঠি পাঠানো হয়েছে রাজ্যের কাছে। তার মধ্যে ১৪টি গিয়েছে ওএনজিসি থেকে। তিনটি চিঠি রাজ্য সরকারকে সরাসরি পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক। এ ছাড়া, ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ হাইড্রোকার্বন থেকে আরও দু’টি চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, এখনও রাজ্য সরকারের সাড়া মেলেনি।
২০১৮ সালে উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে খনিজ তেলের সন্ধান পাওয়া যায়। সেখানকার মোট ৫.৮৮ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় ওই তেল রয়েছে বলে জানায় ওএনজিসি। তার পরেও একাধিক জায়গায় তেলের সন্ধান মিলেছে বলে কেন্দ্রের দাবি। তালিকায় রয়েছে রানাঘাট, কাঁকপুলের মতো এলাকা। রাজ্যের অন্তত ৯৯.০৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় খনিজ তেল রয়েছে বলে দাবি কেন্দ্রের। ওই সব এলাকায় খননের জন্য রাজ্যকে দফায় দফায় চিঠি দিয়েছে কেন্দ্র। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার রাজ্যে পেট্রোলিয়াম শিল্পের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানতে চেয়ে প্রশ্ন করেছিলেন। তার জবাবে রাজ্যকে দেওয়া চিঠিগুলির কথা জানিয়েছেন পেট্রোলিয়ামমন্ত্রী।
কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, পশ্চিমবঙ্গে খনিজ তেলের জন্য ইতিমধ্যে ১,০৪৫.৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। যদি খননকার্যের মাধ্যমে রাজ্যের মাটির তলা থেকে তেল উত্তোলন শুরু করা যায়, তবে সেই বাবদ প্রতি বছর পশ্চিমবঙ্গের আয় হতে পারে ৮,১২৬ কোটি টাকা। সঙ্গে রাজ্যে প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি হতে পারে বলে দাবি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর।