• সুতাহাটায় কুমারচন্দ্র জানার স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস সংরক্ষণ ও সংগ্রহশালা তৈরির দাবি
    বর্তমান | ২৯ নভেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, হলদিয়া: সুতাহাটার স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস সংরক্ষণ ও এলাকায় সংগ্রহশালা তৈরির দাবি উঠেছে। স্বাধীনতা সংগ্রামী কুমারচন্দ্র জানার ১৩৫তম জন্মদিবস উপলক্ষ্যে কুমারচন্দ্র জানা স্মরণ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। গিরিশ মোড় স্বাধীনতা সংগ্রামী কুমারচন্দ্র জানা সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি এই অনুষ্ঠান আয়োজন করে। ২৭ ও ২৮ নভেম্বর দু’দিন ধরে ওয়েলফেয়ার সোসাইটি স্বাধীনতা সংগ্রামীর জীবনাদর্শ নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচি নিয়েছে। সেখানেই সংগ্রহশালা গড়ে তোলার দাবি করা হয়েছে।


    প্রসঙ্গত, ১৮৮৯ সালের ২৮ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন কুমারচন্দ্র জানা। গান্ধীবাদী নেতা এবং স্বাধীনতা সংগ্রামী কুমারচন্দ্র জানা ‘সুতাহাটার গান্ধী’ নামে পরিচিত। জাতীয় কংগ্রেসের অখণ্ড মেদিনীপুর জেলার সভাপতি থাকাকালীন তাঁর আন্তরিক আহ্বানে ১৯৪৫ সালে ২৯ ডিসেম্বর সুতাহাটায় এসেছিলেন গান্ধীজি। জওহরলাল নেহেরু, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল, বিধাচন্দ্র রায় এক ডাকে তাঁকে চিনতেন। 


    কুমারচন্দ্র জানা ২৪ বছরের স্বাধীনতা সংগ্রামের জীবনে ১২বছর কারাবাস করেছেন। গান্ধীজির আদর্শে তিনি মেদিনীপুরের প্রথম জাতীয় বিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন সুতাহাটার অনন্তপুরে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় তাঁকে ‘মহম্মদ কুমারচন্দ্র’ বলা হতো। ১৯৫২ সালের প্রথম নির্বাচনে সুতাহাটা বিধানসভায় সর্বাধিক ভোটে জয়ী হয়ে প্রথম বিধায়ক হয়েছিলেন কুমারবাবু। তাঁর জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোকপাত করে আঞ্চলিক ইতিহাস বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হরিপদ মাইতি বলেন, কুমারচন্দ্র জানার জীবন ও কর্ম এবং তাঁর স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস সংরক্ষণের প্রয়োজন। 


    তাঁর জীবন সংগ্রামের ছায়ায় শিক্ষক শুভঙ্কর দাস একটি উপন্যাস লিখেছেন। কিন্তু জাতীয় বিদ্যালয় বা গান্ধী আশ্রমের মতো তাঁর তৈরি সংস্থাগুলি সংরক্ষণ হওয়া প্রয়োজন। তাঁর দাবি, ওয়েলফেয়ার সোসাইটি একটি কুমারচন্দ্র জানার নামাঙ্কিত একটি সংগ্রহশালা গড়ে তুলুক, যেখানে আগামী প্রজন্ম ইতিহাস জানতে পারবে। তাঁর স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস পাঠ্যবইয়ে যুক্ত হওয়া প্রয়োজন। স্বাধীনতা সংগ্রামী কুমারচন্দ্র জানা সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির উদ্যোগে ১১তম বর্ষে কুমারচন্দ্র জানা স্মরণ অনুষ্ঠান হল হলদিয়ার গিরিশমোড়ে। সোসাইটির পরিচালন কমিটির সভাপতি মিলন মণ্ডল ও সম্পাদক শিবপ্রসাদ প্রধান বলেন, বৃহস্পতিবার কুমারচন্দ্র জানার জন্মদিনে দুর্গাচক থেকে চৈতন্যপুর পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার পদযাত্রা হয়েছে। এদিন সুতাহাটা বিধানসভা এলাকায় কুমারচন্দ্র জানা ও অন্যান্য স্বাধীনতা সংগ্রামী ও মনীষীদের মূর্তিতে মালা দেওয়া হয়েছে। এদিন সন্ধ্যায় এক অনুষ্ঠানে হলদিয়ার প্রায় ২ হাজার দুঃস্থ মানুষকে কম্বল, চাদর, শাড়ি তুলে দেওয়া হয়। উপস্থিত ছিলেন হলদিয়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জ্যোতির্ময় কর, জাতীয় শিক্ষক সুজন বালা, সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি কাউন্সিলর প্রদীপ দাস, প্রাক্তন কাউন্সিলার আজিজুল রহমান প্রমুখ।
  • Link to this news (বর্তমান)