নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: চাষিদের দুয়ারে গিয়ে ধান কিনছে রাজ্য সরকার। ফলে ধান বহন করে সেন্ট্রালাইজড প্রোকিওরমেন্ট সেন্টারে(সিপিসি) নিয়ে যেতে হচ্ছে না। বাড়িতে কিংবা খেত থেকে ধান কিনে নেওয়ায় ঝঞ্ঝাট কমেছে বলে দাবি চাষিদের। মুর্শিদাবাদ জেলায় স্থায়ী কেন্দ্রীয় ধান ক্রয় কেন্দ্র(সিপিসি) রয়েছে ৪৫টি। এছাড়াও ১৫টি মোবাইল ধান ক্রয় কেন্দ্র চালু করেছে জেলা খাদ্যদপ্তর। বুধবার থেকে এই মোবাইল সিপিসি চাষিদের বাড়ি থেকে ধান সংগ্রহ করেছে। খরিফ মরশুমে কান্দি, খড়গ্রাম, বড়ঞা, ভরতপুর-১ ও ২, সাগরদিঘি ও নবগ্রাম ব্লকে বেশি পরিমাণে ধান চাষ হয়। এই সাতটি ব্লকে মোবাইল সিপিসি ঘুরে ঘুরে ধান কিনছে। পাশাপাশি, নিজেদের এলাকায় যাতে চাষিরা ধান বিক্রি করতে পারে, সেই সুবিধার্থে ২০০টি বিভিন্ন সংস্থা ধান কিনতে শুরু করেছে। সংস্থার সদস্যরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধান নিয়ে আসছেন।
রাজ্যজুড়ে চাষিদের কাছ থেকে সরকারি উদ্যোগে ধান কেনার কাজ শুরু হয়েছে। মুর্শিদাবাদ জেলায় এবার রেকর্ড পরিমাণ ধান কেনা হবে। টার্গেট রয়েছে ৬ লক্ষ ২২ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনার। গত ১৮ নভেম্বর থেকে জেলায় ধান কেনার কথা থাকলেও মুর্শিদাবাদে ইন্টারনেট পরিষেবা না থাকায় সেভাবে কাজ হয়নি। চলতি সপ্তাহ থেকেই ধান কেনা শুরু হয়েছে। সোমবার থেকে জেলাজুড়ে ধান কেনা শুরু করেছে খাদ্যদপ্তর। ৪৫টি সিপিসিতে ধান কেনা শুরু হতেই চাষিরা লাইন দিচ্ছেন। বুধবার থেকে আবার মোবাইল সিপিসি চাষিদের বাড়ি থেকে ধান কিনছে। অর্থাৎ, সব মিলিয়ে এবার ৬০টি কেন্দ্রীয় ধান ক্রয় কেন্দ্র সহায়ক মূল্যে ধান কিনছে। এছাড়া বিভিন্ন সরকারি এজেন্সির মাধ্যমে ধান কেনা হবে। ধান কেনার সঙ্গে যুক্ত সরকার পোষিত এজেন্সিগুলি বিভিন্ন কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতি, ফার্মার প্রডিউসার কোম্পানি লিমিটেড, ফার্মার প্রডিউসার ও অর্গানাইজেশন এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের মাধ্যমে গ্রামে গ্রামে গিয়ে সহায়ক মূল্যে ধান কিনবে। এরকম প্রায় ২০০টি সংস্থাকে দিয়ে ধান কেনা হবে বলে জানিয়েছেন খাদ্যদপ্তরের আধিকারিকরা।
জেলা খাদ্যনিয়ামক সুদীপ্ত সামন্ত বলেন, আমরা ৪৫টি স্থায়ী ক্রয়কেন্দ্র ছাড়াও আরও ১৫টি মোবাইল ক্রয় কেন্দ্র চালু করেছি। কান্দি ব্লকের পাঁচটি ব্লক এবং সাগরদিঘি, নবগ্রাম ব্লকের চাষিদের জন্য এই মোবাইল ক্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। এছাড়া ২০০টি বিভিন্ন সংস্থা ধান কিনতে শুরু করেছে।
এবছর ধানের সহায়ক মূল্য বেড়ে কুইন্টাল পিছু ২৩০০ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় ধান ক্রয় কেন্দ্রে নিয়ে গেলে কুইন্টাল পিছু অতিরিক্ত ২০ টাকা করে দেওয়া হবে চাষিদের। যার ফলে সরকারি সিপিসিতে ধান দেওয়ার জন্য উৎসাহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে ডিসেম্বর মাস থেকে ধান কেনায় গতি আসবে বলে জানা গিয়েছে।
সাগরদিঘির সুকির মোড় এলাকার চাষি ইয়াকুব শেখ বলেন, বাড়ি থেকে যদি ধান নিয়ে যায় ভালোই হবে। মোবাইল সিপিসি পাড়ায় এলে তবেই ধান বিক্রি করব। খাদ্যদপ্তরের এই উদ্যোগে সুবিধা হবে।
জেলা খাদ্যদপ্তরের এক আধিকারিক জানান, ধান কেনার বেশিরভাগটাই হয় ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাসের মধ্যে। আগামী সপ্তাহ থেকে সিপিসিগুলিতে ধান বিক্রির চাপ বাড়বে। মোবাইল সিপিসি সাতটি ব্লক থেকে ধান কিনতে শুরু করলে, চাষিদের বাড়তি সুবিধা হবে। ফাইল চিত্র