বাঁকুড়ায় চোলাই বন্ধ নিয়ে আবগারি দপ্তর ও পুলিসের তীব্র টানাপোড়েন
বর্তমান | ২৯ নভেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: বাঁকুড়ায় বেআইনি চোলাইয়ের ব্যবসা রমরমিয়ে চলছে। এই জেলার সোনামুখী ও আশপাশের থানা এলাকায় সবচেয়ে বেশি চোলাই তৈরি হচ্ছে। সোনামুখীতে তৈরি চোলাই দামোদর নদ পেরিয়ে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানে পাচার করা হচ্ছে। পুলিস ও আবগারি দপ্তর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না। আবগারি দপ্তরের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন সোনামুখী থানার কিছু আধিকারিক। সেই অভিযোগ মানতে চায়নি ওই দপ্তর।
আবার অনেকসময় পুলিস বা আবগারি কর্মী-আধিকারিকরা অভিযানে যাওয়ার আগেই চোলাই কারবারিরা পাততাড়ি গুটিয়ে এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছে। আবগারি দপ্তরের দাবি, চোলাই কারবারিরা নিজেদের ঘাঁটির আশপাশের রাস্তায় নজরদারির জন্য লোক মোতায়েন রাখে। সরকারি গাড়ি বা লোকলস্কর দেখলেই তারা ফোনে চোলাই কারবারিদের সতর্ক করে দেয়।
সোনামুখী থানার এক আধিকারিক বলেন, এই থানার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে চোলাইয়ের ভাটি গজিয়ে উঠেছে। রাধামোহনপুর, হামিরহাটি ও মানিকবাজার পঞ্চায়েতে সবচেয়ে বেশি চোলাই তৈরি হয়। চোলাই কারবারিদের মাথায় প্রভাবশালীদের হাত রয়েছে। তা সত্ত্বেও আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। অথচ যাদের চোলাই কারবার বন্ধ করার কথা, সেই আবগারি দপ্তর বেশিরভাগ সময় নিষ্ক্রিয় থাকছে। নামকেওয়াস্তে অভিযান চালিয়ে তারা দায় সারছে। চোলাই কারবার বাড়লে আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যা হয়। সেই সমস্যাও আমাদের পোহাতে হচ্ছে।
সোনামুখীর ভারপ্রাপ্ত আবগারি আধিকারিক নরেন্দ্রনাথ রাজোয়ার বলেন, পুলিসের অভিযোগ ভিত্তিহীন। দপ্তরের দুর্গাপুর ডিভিশনের পাশাপাশি সোনামুখী থানার সঙ্গেও আমরা চোলাইয়ের ভাটিতে অভিযান চলিয়েছি। ১৫ ও ১৮ নভেম্বর রাধামোহনপুর, খুরাশুলি ও রামপুর ফরেস্ট এলাকা থেকে ২৭৬৫লিটার চোলাই তৈরির কাঁচামাল নষ্ট করা হয়। সেইসঙ্গে অ্যালুমিনিয়ামের হাঁড়ি সহ চোলাই তৈরির অন্য উপকরণ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে আমরা চোলাই তৈরির অভিযোগে ১১জনকে গ্রেপ্তার করেছি। কারবারিরা নদী পেরিয়ে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানে চোলাই পাচার করছে। তা আটকাতে দামোদরের পাড়ে নজরদারি বাড়িয়েছি। কিন্তু চারচাকা গাড়িতে এলাকায় গেলে ‘খোচর’ বা ইনফরমাররা চোলাই কারবারিদের খবর দিয়ে দেয়। তাই আমরা এখন বাইকে চেপে অভিযানে যাচ্ছি।