সংবাদদাতা, পতিরাম: বালুরঘাট ও কুমারগঞ্জে আত্রেয়ী নদীর ভাঙন রুখতে বড় প্রকল্প শুরু করার পথে হাঁটল সেচদপ্তর। দুই ব্লকের তিন জায়গায় নদীপাড় বাঁধাইয়ের কাজ শুরু করতে বরাদ্দ করা হয়েছে প্রায় ৮ কোটি টাকা। বিপুল টাকায় বাঁধের কাজ শুরু করতে টেন্ডার হয়ে গিয়েছে। ওই জায়গাগুলিতে মাপজোখ শুরু করেছে সেচদপ্তর।
দপ্তর সূত্রে খবর,বালুরঘাট ব্লকের বর্ষাপাড়া এবং কুমারগঞ্জ ব্লকের ব্রহ্মপুর ও কানুরা এলাকায় কাজগুলি হবে। সবমিলিয়ে ৩ কিলোমিটার ৯০০ মিটার এলাকাজুড়ে এই কাজ চলবে। মূলত, নদী তীরবর্তী এলাকায় কৃষিজমি ও ঘরবাড়ি বাঁচাতে ওই পাড়গুলি বাঁধাইয়ের কাজ শুরু করছে সেচদপ্তর।
এবিষয়ে সেচদপ্তরের বালুরঘাট ডিভিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার অঙ্কুর মিশ্র বলেন, সেচ দপ্তর একটি বড় প্রকল্প শুরু করবে। সেই কাজের টেন্ডার পুজোর আগেই হয়েছিল। তবে বর্ষার পর প্রাথমিকভাবে বিভিন্ন কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। এই প্রকল্পের জন্য প্রায় ৮ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। নদীর পাড় বাঁধাই করলে ওই এলাকাগুলির ভাঙন সমস্যা মিটবে।
প্রাথমিকভাবে দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এইচডিপিই ব্যাগ দিয়েই পাড় বাঁধাই হবে। এতে অনেক মজবুত হবে বাঁধ। প্রায় চার কিলোমিটার জায়গা জুড়ে এই কাজ শুরু হলেই সত্যিই কিছুটা নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারবেন বাসিন্দারা।
সেচদপ্তরের তরফে জানা গিয়েছে, বালুরঘাটের বর্ষাপাড়ায় আত্রেয়ী নদীর ভাঙনের সমস্যা দীর্ঘদিনের। ওই এলাকায় ভাঙনের কারণে অনেক কৃষিজমি নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে বলে বারবার অভিযোগ করছিলেন কৃষকরা। শুধু তাই নয়, এভাবে ভাঙন হলে বাড়িঘর তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা নদীর পাড়ের বাসিন্দাদের। এদিকে কুমারগঞ্জের ব্রহ্মপুর ও কানুরাতেও একই সমস্যা। ভাঙনের ফলে তলিয়ে যাচ্ছে গাছগাছালিও। এবার পাড় বাঁধাই হলে সমস্যা মিটবে বলে বাসিন্দারা মনে করছেন। এবিষয়ে বর্ষাপাড়ার এক কৃষক সত্যেন মণ্ডল বলেন, বর্ষা এলে প্রতিবছর আমাদের এলাকায় ভাঙনের সমস্যা দেখা দেয়। ইতিমধ্যে নদীপাড়ের অনেক জমি আত্রেয়ীর গর্ভে চলে গিয়েছে। ফলে কৃষকদের এখন সর্বহারার মতো অবস্থা। এরপর বাড়িঘরও বাঁচবে কি না সন্দেহ। ভাঙন আটকাতে পাড় বাঁধাইয়ের কাজ শুরু হবে শুনছি। সেটা হলে আমাদের খুবই উপকার হবে।
ব্রহ্মপুরের বাসিন্দা গৌর সরকারের কথায়, আমাদের এখানেও নদী ভাঙন নিয়ে কম সমস্যা নেই। বছর বছর নদী এগিয়ে আসছে আমাদের দিকে। বাড়িঘর ভেঙে পড়ার আশঙ্কা বাড়ছে। পাড় বাঁধানো হলে একটু নিশ্চিন্ত হব।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় সেচ দপ্তরের অন্যতম বড় প্রকল্প আত্রেয়ীর উপরে স্বল্প উচ্চতার বাঁধ বা ড্যাম তৈরি। এই কাজের জন্য প্রায় ৩৩ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। এবার আত্রেয়ীর উপরে নানা জায়গায় ভাঙনের সমস্যা মেটানোর মতো বড় প্রকল্প শুরু হতে চলায় অনেকটাই নিশ্চিন্ত বাসিন্দারা।
পাড় বাঁধাইয়ের কাজের জন্য সমীক্ষা। কুমারগঞ্জের ব্রহ্মপুরে তোলা নিজস্ব চিত্র।