• তৃণমূলের চাপে বাড়ল সংসদীয় কমিটির রিপোর্ট দেওয়ার সময়, ওয়াকফ বিল যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরোধী, তোপ মমতার  
    বর্তমান | ২৯ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি ও কলকাতা: ওয়াকফ বিল নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোনও আলোচনা করেনি কেন্দ্র। এটা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো বিরোধী। তাই বিলের বিরোধিতায় সংসদে সরব হয়েছে তৃণমূল। বৃহস্পতিবার বিধানসভার অধিবেশনে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বস্তুত তৃণমূল সহ বিরোধীদের চাপে এদিনই বেড়ে গিয়েছে ‘ওয়াকফ সংশোধনী বিল’ সংক্রান্ত সংসদীয় যৌথ কমিটির রিপোর্ট দেওয়ার সময়সীমা। ফলে এখনই মোদি সরকার ওই বিল পাশ করাতে পারবে না। বিরোধীদের দাবি মেনে আগামী বাজেট অধিবেশনের (২০২৫ সালের এপ্রিল মাস) শেষদিনে যৌথ কমিটির রিপোর্ট পেশ করার জন্য সময় চাইলেন কমিটির চেয়ারম্যান বিজেপির জগদম্বিকা পাল। লোকসভায় ধ্বনি ভোটে সময়সীমা বাড়ানোর প্রস্তাব পাশও হয়ে গেল। সরকার পক্ষের মন্ত্রী, সাংসদরাও হাত তুলে দিলেন সমর্থন। ফলে আগামী বছরের বাদল অধিবেশনের আগে আর কোনওভাবেই এই বিল পাশ হবে না।


    ১৯৯৫ সালের ওয়াকফ আইনকে সংশোধন করে গত ৮ আগস্ট লোকসভায় সংখ্যালঘু বিষয়কমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু ওয়াকফ সংশোধনী বিল পেশ করেছিলেন। কিন্তু বিরোধীদের প্রবল চাপে সেটি সংসদীয় যৌথ কমিটিতে পাঠানো হয়। নতুন বিলে ৪৪টি সংশোধনী আনতে চায় কেন্দ্র। যার অধিকাংশে আপত্তি বিরোধীদের। তাই কমিটি ২৬টি বৈঠকের পরেও সবর্সম্মত রিপোর্টই তৈরি করতে পারেনি। আরও আলোচনার দাবি জানিয়েছে বিরোধীরা। সেই দাবি মেনে নিয়েছেন কমিটির চেয়ারম্যান।


    মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার বলেছেন, কেন্দ্রের এই বিল আইনে পরিণত হলে ধ্বংস হয়ে যাবে ওয়াকফ ব্যবস্থা। যে বিল কেন্দ্রের তরফে আনা হয়েছে, তা নিয়ে আগে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল। কোনও ধর্মের উপর আক্রমণ হলে আমরা তার নিন্দা করি। কেন্দ্রের এই বিলের মধ্যে দিয়ে একটি ধর্মকে নির্দিষ্ট করে টার্গেট করা হয়েছে। ওয়াকফ বিল একটি ধর্মের বিরুদ্ধে বিল। এর বিরুদ্ধে আমরা কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছিলাম। এই বিল স্বাধীনতার অধিকার, সাম্যের অধিকার লঙ্ঘন করেছে। আমি সবাইকে নিয়ে চলার পক্ষপাতী। কেন্দ্রের নয়া বিল অ্যান্টি ফেডারেল। ওয়াকফে শুধু মুসলিমরা নন, হিন্দুরাও দান করেছেন। আমাদের সময়ে ওয়াকফ সম্পত্তি দখল হয়নি। ১৯৩৪ সালে কে দখল করেছে, সেটা আমার পক্ষে জানা সম্ভব নয়। আমি তারজন্য বুলডোজার পাঠাতে পারব না। জমি দখলের বিষয়টি ওয়াকফ বোর্ড ট্রাইব্যুনালকে জানিয়েছে। 


    বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য জমিয়েত উলেমার ডাকে ধর্মতলার রানি রাসমণি অ্যাভেনিউয়ে জনসভার ডাক দেওয়া হয়েছিল। সেখানে সংগঠনের সভাপতি সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, ওয়াকফ বিল নিয়ে আন্দোলন তীব্রতর হবে। এই বিল কিছুতেই মেনে নেওয়া হবে না।
  • Link to this news (বর্তমান)