নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: অবশেষে বকেয়া ডিএ কি পাওয়া যাবে? জল্পনা তুঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের অন্দরে। কোভিডকালে কেন্দ্রীয় কর্মীদের তিন কিস্তির ডিএ স্থগিত রাখা হয়েছিল। সরকারি পরিভাষায় বিশেষ সার্কুলার দিয়ে বলা হয়েছিল ডিএ আপাতত ফ্রিজ করে রাখা হচ্ছে। কারণ ছিল অর্থাভাব। কোভিডকালে তাবৎ বাণিজ্য ছিল বন্ধ। ফলে ট্যাক্স সংগ্রহে ঘাটতি হয়। পাশাপাশি রপ্তানি বন্ধ থাকায় সরকারের রাজকোষে টানাটানি শুরু হয়। রাজ্যগুলিও দাবি করছিল আর্থিক সহায়তা। বিভিন্ন সেক্টরের জন্য দেওয়া হয়েছিল একাধিক প্যাকেজ। কিন্তু কোভিডের পর সব স্বাভাবিক হয়ে গেলেও ডিএ নিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক কোনও উচ্চবাচ্য করেনি। কিন্তু সম্প্রতি দুই দফায় কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের সংগঠন দেখা করে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকে। দেওয়া হয়েছে স্মারকলিপিও। তিন কিস্তির ডিএ এরিয়ার এবার যাতে মিটিয়ে দেওয়া হয় সেই দাবি রাখা হয়েছে। বলা হয়েছে, যেহেতু ষোড়শ অর্থ কমিশন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে রাজ্যগুলির সঙ্গে কথা বলে তাদের রিপোর্ট তৈরির প্রক্রিয়া অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, তাই আর দেরি করা ঠিক নয়।
সরকারি সূত্রে জানা যাচ্ছে, তিন কিস্তির বকেয়া ডিএ নিয়ে যে দাবি উঠছে সেটা নিয়ে সরকার আগে থেকেই ভাবনাচিন্তা করছে। তবে সেটা আদৌ দেওয়া হবে কি না সেই সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। আগামী বছরের বাজেট বৈঠক অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে। সেই বৈঠকে এই নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। যুক্তি উঠে আসছে, নির্দিষ্ট সময় অন্তর ডিএ দেওয়া পে কমিশনের নিয়ম। কোনও বিশেষ পরিস্থিতিতেও পে কমিশনের নির্দেশিকা ও সিদ্ধান্ত আচমকা লঙ্ঘন করা যাবে না। পে কমিশন সংসদে অনুমোদন করাতে হয়। সেখানেই যেহেতু বলা আছে যে, মূল্যবৃদ্ধিকে মাপকাঠি ধরে বছরে দুবার কেন্দ্রীয় কর্মীদের ডিএ দেওয়া হবে। সেটা যদি কোনও সময় দেওয়া না যায়, তাহলে এরিয়ার তথা বকেয়া হিসেবেই বিবেচিত হবে। এই যুক্তি দেখিয়েই স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে সরকারকে।
কোভিডকালে ২০২০ সালের জানুয়ারি, ২০২০ সালের জুলাই এবং ২০২১ সালের জানুয়ারি, এই তিন কিস্তির ডিএ ফ্রিজ করা হয়। ২০১৯ সালের জুলাইয়ের ডিএ পাওয়ার পর আবার ২০২১ সালের জুলাই মাসের ডিএ দেওয়া হয় নভেম্বর মাসে। সরকার সেই সময় ঘোষণা করেছিল প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা সরকারের সাশ্রয় হয়েছে। যা বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যে ব্যবহার করা হয়েছে কোভিডকালে। প্রসঙ্গত আগামী বছরই অষ্টম পে কমিশন গঠন হতে পারে। তার আগেই বকেয়া ডিএ নিয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। যদিও এই বিপুল পরিমাণ অর্থ কি মন্ত্রক দিতে রাজি হবে? আপাতত সেই প্রশ্নই উঠছে।