লালবাজার সূত্রের খবর, গত ১৫ দিনে কলকাতা পুলিশ এলাকায় নথিভুক্ত অগ্নিকাণ্ডের সংখ্যা ২৫টি। এর মধ্যে শেষ ১০ দিনে শহরে নথিভুক্ত অগ্নিকাণ্ডের সংখ্যা ১৮টি। দিন চারেক আগে উল্টোডাঙা স্টেশন সংলগ্ন বস্তিতে আগুন লেগে পুড়ে ছাই হয়ে যায় ১০-১২টি ঘর। সেই ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে এর কারণ স্পষ্ট না হলেও ভোরের ওই আগুনে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত বলে আশঙ্কা করছেন তদন্তকারীরা। এমনকি, কোনও ভাবে ঘরবন্দি হয়ে প্রাণহানি ঘটাও অস্বাভাবিক ছিল না বলে তাঁরা জানাচ্ছেন। এর কয়েক দিন আগে কাঁকুলিয়া রোডেও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। প্রাথমিক ভাবে জ্বলন্ত ধূপ থেকে সেই আগুন ছড়ায় বলে পুলিশের অনুমান। এ ছাড়াও গত ১৫ দিনে যাদবপুরের লর্ডসের মোড় থেকে শুরু করে সার্ভে পার্ক, নারকেলডাঙা, মুচিপাড়া-সহ শহরের একাধিক থানা এলাকায় বার বার আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে।
শীতে এমনিতেই শহরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বৃদ্ধি পায় বলে বিশেষজ্ঞদের দাবি। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে যত্রতত্র আগুন জ্বালিয়ে পোহানো, ঘরে মশার হাত থেকে বাঁচতে জ্বলন্ত ধূপ বহু ক্ষেত্রেই অগ্নিকাণ্ডের প্রাথমিক কারণ হয় বলে তাঁদের দাবি। এ ছাড়া, শর্ট সার্কিট থেকে আগুন তো আছেই। শুষ্ক আবহাওয়ায় দ্রুত সেই আগুন ছড়ায়।
যদিও এ বছর আগুন পোহানোর মতো ঠান্ডা এখনও তেমন না পড়লেও তার আগেই পর পর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা যে চিন্তা বাড়াচ্ছে, তা অস্বীকার করছেন না দমকল দফতরের আধিকারিকেরা। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বেশ কিছু ভাবনাচিন্তাও শুরু করা হয়েছে দমকল বিভাগের তরফে।
পুলিশ এবং দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, এমনিতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে শহরের বিভিন্ন জায়গায় দমকলের ইঞ্জিন মজুত রাখা হয়। গত কয়েক দিনে পর পর অগ্নিকাণ্ডের পরে সেই সংখ্যা আরও বাড়ানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে ঘিঞ্জি এলাকা বা সরু গলিতে যাতে দমকলকর্মীরা পৌঁছতে পারেন, সে জন্য থানাগুলির পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় আগুন নেভানোর প্রাথমিক জিনিস-সহ মোটরবাইকও রাখা হচ্ছে।
এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘বহু ক্ষেত্রে দেখা যায়, সরু গলিতে বড় গাড়ি ঢোকার জায়গা খুঁজতে খুঁজতেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। তা যাতে কোনও ভাবে না হয় এবং দ্রুত যাতে ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পারে, তার জন্য মোটরবাইকগুলি মূলত কাজ করে।’’ আগুন নেভানোর পাশাপাশি বস্তি এলাকার বাসিন্দাদের সচেতনতা বাড়াতেও দমকলের তরফে জোর দেওয়া হচ্ছে।