কেন্দ্রের পিএম পোষণ দফতর বুধবার জানিয়েছে, প্রাক্-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের জন্য মিড-ডে মিলে মাথাপিছু বরাদ্দ করা হয়েছে ৬ টাকা ১৯ পয়সা। উচ্চ প্রাথমিক, অর্থাৎ পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে মাথাপিছু বরাদ্দ করা হয়েছে ৯ টাকা ২৯ পয়সা। দু’বছর পরে এই বরাদ্দ বাড়ল। প্রাথমিকে বরাদ্দ বেড়েছে ৭৪ পয়সা এবং উচ্চ প্রাথমিকে ১ টাকা ১২ পয়সা। প্রশ্ন উঠেছে, মূল্যবৃদ্ধির এই বাজারে বরাদ্দে এত সামান্য বৃদ্ধি হলে পড়ুয়াদের পুষ্টিকর খাবার কী ভাবে দেওয়া সম্ভব? শিক্ষকদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন, কেন্দ্র না বাড়ালেও রাজ্য সরকার কেন তাদের অংশের বরাদ্দ বাড়াচ্ছে না? কেরল, তামিলনাড়ু কিন্তু নিজেদের অংশের বরাদ্দ বাড়িয়ে দিয়েছে।
এই প্রশ্নের উত্তরে রাজ্য পিএম পোষণ প্রকল্পের আধিকারিকদের জবাব, বরাদ্দ বাড়ানোর বিষয়টি শিক্ষা দফতর খতিয়ে দেখবে। তবে, তাদের যে পুষ্টি উদ্যান তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে, তা যথেষ্টই সফল। শুধু পুষ্টি উদ্যানই নয়, কয়েকটি স্কুল নিজেদের পুকুরে মাছ চাষও করছে বলে জানা গিয়েছে। বাঁকুড়ার পিএম পোষণ দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘তালড্যাংরা এবং ছাতনা ব্লকের তিনটি স্কুল চত্বরের পুকুরে রুই, কাতলা ও মৃগেলের চারা ফেলা হয়েছে। সাত-আট মাসের মধ্যে ওই চারাগুলি বড় মাছে পরিণত হবে। তখন ওই সমস্ত স্কুলের পড়ুয়ারা মিড-ডে মিলে শুধু ডিম নয়, মাছের টুকরোও পাবে। ওই তিনটি স্কুলের পরে আরও সাতটি স্কুল চত্বরের জলাশয়ে মাছের চারা ফেলা হবে।’’
যদিও শিক্ষকদের একাংশের মতে, এ ভাবে শুধু পুষ্টি উদ্যান তৈরি করে সামগ্রিক ভাবে গোটা রাজ্যের পড়ুয়াদের মুখে পুষ্টিকর খাবার তুলে দেওয়া সম্ভব নয়। এআইইউটিইউসি-র রাজ্য সম্পাদক অশোক দাস বললেন, ‘‘হাতে গোনা কিছু স্কুলেই এ ভাবে পুষ্টি উদ্যান তৈরি করা সম্ভব। পুকুর তো দূরের কথা, শহরাঞ্চলে বেশির ভাগ স্কুলে তো মাঠই নেই। আমাদের দাবি, মিড-ডে মিলের বরাদ্দ পর্যাপ্ত পরিমাণ বাড়াতে হবে। আনাজের দাম যতটা বেড়েছে, সেই তুলনায় মিড-ডে মিলের বরাদ্দ বাড়েনি। যেটুকু বাড়ল, তাতে এত দিন পড়ুয়াদের পাতে যতটা খাবার তুলে দেওয়া যেত, সেটুকুও দেওয়া যাবে কিনা, সন্দেহ আছে।’’