• বাংলাদেশ নিয়েও আরজি করের মতো পথে নামছেন মোনালিসা, মিছিলের ডাক দিলেন তারাসুন্দরীর ‘বড়দি’
    আনন্দবাজার | ২৯ নভেম্বর ২০২৪
  • আরজি কর আন্দোলনের সময়ে তিনি পথে নেমেছিলেন স্কুলের ছাত্রীদের সঙ্গে নিয়ে। হাওড়ার কদমতলার তারাসুন্দরী বালিকা বিদ্যাভবনের প্রধানশিক্ষিকা মোনালিসা মাইতি এ বার সরব বাংলাদেশ নিয়ে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে পথে নামার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। আগামী রবিবার রবীন্দ্রসদনে জমায়েতের জন্য সাধারণ মানুষকে অনুরোধ করেছেন। তাঁর মতে, বাংলাদেশে যা হচ্ছে, তা সমর্থনযোগ্য নয়। কলকাতার রাজপথ থেকে তিনি সে দেশের সংখ্যালঘুদের পাশে থাকার বার্তা দিতে চান।

    আরজি করে মহিলা চিকিৎসক ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় কলকাতায় যখন বিচার চেয়ে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, সেই সময় মোনালিসা স্কুলের ছাত্রীদের নিয়ে প্রথম প্রতিবাদ মিছিল করেছিলেন। মৌনীমিছিলে হেঁটেছিলেন ছাত্রীদের সঙ্গে। এর পরেই সরকারের তরফে স্কুলগুলিতে এই ধরনের মিছিল না করার নির্দেশিকা গিয়েছিল। শিরোনামে উঠে এসেছিলেন মোনালিসা। দুর্গাপুজোর সময়ে তিনি আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে বয়কট করেছিলেন উৎসব। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি এবং তৎপরবর্তী অশান্তির খবরে বিচলিত হয়ে উঠেছেন তারাসুন্দরী স্কুলের সেই ‘বড়দি’। তাঁর কথায়, ‘‘গত কয়েক মাস ধরেই আমাদের প্রতিবেশী দেশ উত্তাল। এত দিন চুপ করে ছিলাম। তাদের রাজনৈতিক বিষয়ে মাথা গলাইনি। কিন্তু আমরা দেখছি, স্বাধীন একটি দেশে জাতের নামে, সংখ্যালঘু তত্ত্ব দিয়ে নাগরিকদের মারা হচ্ছে। বিবেক থাকলে এর মধ্যে কেউ চুপ করে থাকতে পারেন না।’’

    বাংলাদেশের পরিস্থিতি উল্লেখ করে মোনালিসার আহ্বান, ‘‘বাংলাদেশের সেই সমস্ত বুভুক্ষু মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সময় এসেছে, যাঁরা নিজেদের জন্মস্থানকেই দেশ বলে মেনে নিয়ে সেখানে থেকে গিয়েছেন। তাঁরা সংখ্যালঘু না সংখ্যাগুরু, তা বিবেচনা করে দেখেননি। প্রত্যেক স্বাধীন দেশের শাসকের দায়িত্ব, নাগরিকদের সমান ভাবে পরিষেবা দেওয়া। বাংলাদেশের সরকার সেটা করতে ব্যর্থ হয়েছে। সেখানে যা হচ্ছে, তা ঠিক হচ্ছে না— এই বার্তাই আমি দিতে চাই।’’

    কোনও একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অঞ্চলে যাঁরা সংখ্যালঘু, সারা বিশ্বের প্রেক্ষিতে দেখতে অনেক সময় তাঁরাই সংখ্যাগুরু হয়ে ওঠেন। ফলে সংখ্যালঘু এবং সংখ্যাগুরুর মতো তকমাগুলি মুছে ফেলার সময় এসেছে, মত মোনালিসার। তাঁর কথায়, ‘‘প্রত্যেক নাগরিকের দায়িত্ব অন্য নাগরিকের বেঁচে থাকার অধিকার সুরক্ষিত করা। তাই আমি আগামী রবিবার বিকেলে রবীন্দ্রসদনে সকলকে জড়ো হওয়ার ডাক দিচ্ছি। বাংলাদেশে মানুষ নিধনের যে যজ্ঞ শুরু হয়েছে, তা আমরা ভাল চোখে দেখছি না— কলকাতার রাজপথ থেকে এই বার্তা যেন দেওয়া যায়।’’

    উল্লেখ্য, গত সোমবার চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারির পর থেকেই বাংলাদেশের একাংশে নতুন করে অশান্তি শুরু হয়েছে। তাঁর মুক্তির দাবিতে পথে নেমেছেন সে দেশের সংখ্যালঘুরা। পুলিশের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষে মঙ্গলবার এক আইনজীবীর মৃত্যু হয়েছে। রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে খারিজ হয়ে গিয়েছে চিন্ময়ের জামিনের আবেদন। বাংলাদেশের হাই কোর্টে ইসকন নিষিদ্ধ করার আবেদন জানিয়ে মামলাও হয়েছিল। তা খারিজ করে দেয় আদালত। বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নয়াদিল্লি। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বিদেশের যে কোনও বিষয়ে ভারত সরকারের অবস্থানকেই সমর্থন করবে তাঁর সরকার।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)