দলীয় নেতৃত্বের শোকজের প্রেক্ষিতে জবাব দিলেন মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। শোকজের জবাব দেওয়ার কথা শুক্রবার bangla.aajtak.in-কে জানালেন 'বিতর্কিত' হুমায়ুন। শোকজের জবাব দেওয়ার পরও হুমায়ুনের গলায় ধরা পড়ল ক্ষোভের সুর। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য সম্পর্কে শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের প্রসঙ্গ টানলেন হুমায়ুন। কল্যাণকে শোকজ করা হয় কি না, তার 'অপেক্ষা' করবেন বলে জানালেন ভরতপুরের বিধায়ক। পাল্টা মুখ খুলেছেন কল্যাণও।
শোকজের জবাব দেওয়ার পর কল্যাণ-বিতর্কের প্রসঙ্গ তুলেছেন হুমায়ুন। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন দলেরই সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। শ্রীরামপুরের সাংসদের যে মন্তব্য ঘিরে তৃণমূলের অন্দরেই চাপানউতোর শুরু হয়ে। সেই ঘটনায় কল্যাণকে কেন শোকজ করা হল না, সেই প্রশ্নই তুলেছেন হুমায়ুন। এদিন তিনি বলেন, 'কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যে তৃণাঙ্কুরের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন। আমার ক্ষেত্রে শোকজ হল, আগামী দিনে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কী করে, সেটা দেখার অপেক্ষায় রইলাম।'
হুমায়ুনের পাল্টা bangla.aajtak.in-কে সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'কোনও মন্তব্য করব না। আমি কেন বলতে যাব? দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি বলবে।'
শোকজের কী জবাব দিলেন হুমায়ুন?
এই প্রসঙ্গে bangla.aajtak.in-কে হুমায়ুন বলেন, 'শোকজের জবাব দিয়েছি। আমাকে যে প্রশ্নে শোকজ করেছিল, সেটা খুব নরমাল বিষয়, যে আমি ওপেন ফোরামে দলের কিছু বিষয় নিয়ে বক্তব্য রেখেছি, তাতে দল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, সম্মানহানি হচ্ছে...সেই বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল। যথাযোগ্য উত্তর দিয়েছি।' এখানেই না থেমে হুমায়ুন বললেন, 'অতীতের কিছু ঘটনা, পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত মুর্শিদাবাদ জেলার কিছু দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা, সাংগঠনিক সভাপতি, চেয়ারম্যান, তাঁদের আচরণ অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং দলের পক্ষ শোভনীয় নয়। তাই তাঁদের এই আচরণের বিরোধিতা করে সর্বোচ্চ নেতৃত্বকে জানানো হয়েছিল। তার কোনও সুরাহা না পেয়েই এভাবে আমি বলেছিলাম। ভবিষ্যতে আর না বলার চেষ্টা করব।' তারপরেই হুমায়ুন স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, 'কেন ওপেন ফোরামে মুখ খুলেছি, তার জবাব দিয়েছি শোকজের নোটিসে।'
বুধবার হুমায়ুনকে শোকজ করে তৃণমূল। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন হুমায়ুন। পরে তিনি জানান যে, মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে দ্রুত শোকজের চিঠির জবাব দিতে বলেছেন। তারপরেই শোকজের জবাব দিলেন হুমায়ুন। বললেন, 'তৃণমূল বিধায়ক হিসাবে যা কর্তব্য, তা পালন করব। চেষ্টা করব, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মর্যাদা রক্ষা করার।'
অন্য দিকে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে উপমুখ্যমন্ত্রী করা নিয়ে সম্প্রতি মন্তব্য করেছিলেন হুমায়ুন। এদিনও নিজের বক্তব্যে অনড় রইলেন তিনি। বললেন, 'নেত্রীর কাছে আবেদন করেছিলাম। আমার মনে হয়েছিল বলেছিলাম। নেতৃত্ব সেটা ইগনোর করেছেন। সেটা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। নেতৃত্বই তো অভিষেককে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক করেছেন। সেই আশা থেকেই বলেছিলাম।'